কলামিস্টঃ আর.এম।।
আধুনিকতার উচ্চো স্থরে এখন আমার সোনার বাংলা, যত দিন যাচ্ছে বাংলাদেশ তত উন্নত হচ্ছে। আধুনিক হচ্ছে, নিত্য নতুন হচ্ছে সব কিছু। জ্ঞান-বিজ্ঞান, তথ্য-প্রযুক্তি, যোগাযোগ ব্যবস্থা, মানুষের চাল-চলন, আচার-ব্যবহার, কথাবার্তা সবই ডিজিটাল হচ্ছে। শহরের দিকে তাকালে প্রাণ জুড়িয়ে যায়, কি সুন্দর লাল নীল রঙ্গিন বাতি! প্রাসাদ গুলো জমিনের উপরে মাথা উচু করে দাঁড়িয়ে আছে, আকাশ ছোঁয়া ভঙ্গিতে। রাস্তাঘাট কত উন্নত। অত্যাধুনিক গাড়ি চলাচল করছে রাস্তা দিয়ে। যুগের আশীর্বাদে গ্রামগুলোও মিনি শহরে পরিণত হয়েছে। আর সব কিছুর সাথে তাল মিলিয়ে বাড়ছে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দামও। কিন্তু আজও বাড়েনি কৃষক, দিনমজুর, পরিশ্রমী, খেটে খাওয়া মানুষ গুলোর জীবনমান।
আর বাড়বেই বা কেন? পৃথিবীতে ওদের জন্মটাই তো পাপ। না হলে, ওদের তৈরী পোশাক গায়ে পড়তে পারি, তা আবার বিদেশে পাঠিয়ে কোটি কোটি বিদেশী মুদ্রা আয় করতে পারি। কিন্তু ওদের বেতন ৫৩০০ টাকার উপরে যায় না। এই টাকায় স্ত্রী, স্বামী, সন্তান নিয়ে কি করে দিন কাটায়? তারপরও বার মাস কাজ করেই যাচ্ছে। গ্রামের কৃষকরা যখন দিনের পর দিন কষ্ট করে, ফসল লাগিয়ে পরে যদি সারের অভাবে ফসল নষ্ট হয়ে যায়, কি করে ওদের অভাব ঘুচবে? নির্মাণ শ্রমিক যারা আছে, তারা অতি যতনে খুব সুন্দর করে রংমহল তৈরী করে দেয়। কিন্তু নিজে ঠিক মত খেতেই পায় না। এর কারণ কি? আর ভ্যানওয়ালা, রিক্সা ওায়ালা ওদের গাল তো প্রস্তুতই আছে চড়-থাপ্পরের জন্য।
কষ্ট তো করেই যাচ্ছে, কিন্তু কোন ফায়দা হচ্ছে না। বৌ-সন্তান উপোস, ঘরে ভাত নেই। কাপড়-চোপড় নেই। কই, ওরা তো মিছিল, মিটিং, ধর্মঘট কিছুই করেনি! কোন বাসে পেট্রোল বোমা মারেনি। কত স্কুল, কলেজ, ভার্সিটির শিক্ষকগণ অনশন করেছেন, ধর্মঘট করেছেন বেতন বাড়ানোর জন্য, পুলিশ প্রশাসন পর্যন্ত তাদের অধিকার আদায় করেছেন। কিন্তু ওদের কি কোন অধিকার নেই?
গৃহপরিচারিকার কাজ করে সামন্য কয়টা টাকার জন্য, বিনিময়ে সহ্য করতে হচ্ছে দৈহিক, মানসিক অত্যাচার। কেন, ওরা কি মানুষ নয়? ওরা কেন নির্যাতিত, নিপীড়িত হবে? কেন বৈষম্যের শিকার হবে? ওরা খেটে খাওয়া মানুষ, ওরাও এদেশের নাগরিক। ওদেরকে সম্মান করতে হবে। মূল্যায়ন করতে হবে। আমি সরকারের কাছে অনুরোদ জানাচ্ছি যে আমাদের সমাজের এই সব অধিকার বঞ্চিত মানুষের দিকে একটু হলেও দৃষ্টি দেন।