ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় উপাসনালয় ‘গৌরমন্দির’ ভাঙচুরের ঘটনায় গ্রেফতার দেখানো হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান দেওয়ান আতিকুর রহমান আঁখিকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) দুপুরে আঁখির সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সরাফ উদ্দিনের আদালতে পাঠায় পুলিশ। আদালত রিমান্ড শুনানির জন্য রবিবার (৮ জানুয়ারি) দিন ধার্য করে তাকে কারাগারে পাঠিয়ে দেন।
এ বিষয়ে জেলা জজ আদালতের পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) মো. মাহবুবুর রহমান জানান, নাসিরনগরের হামলার ঘটনায় আঁখির সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া গেছে। তিনি নাসিরনগরে লোক সমাগমের জন্য ট্রাক ভাড়া করে সাধারণ মানুষকে উত্তেজিত করার জন্যে অর্থ লগ্নিও করেছেন।
তিনি আরও জানান, আঁখিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। তবে আজ (শুক্রবার) আদালতের নিয়মিত কার্যক্রম বন্ধ থাকায় রিমান্ড আবেদনের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়নি। তাই আঁখিকে বিকেলে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। রবিবার আদালত খোলার পর রিমান্ড আবেদনের উপর শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
এর আগে বৃহস্পতিবার (৫ জানুয়ারি) ভোরে ঢাকার ভাটারা থানা এলাকা থেকে আঁখিকে আটক করে পুলিশ। এদিন বিকেল ৩টার দিকে আঁখিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা গোয়েন্দা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে ভাটারা থানা পুলিশ। এরপর ৩০ অক্টোবর গৌরমন্দির ভাঙচুর মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়।
উল্লেখ্য, গত ২৯ অক্টোবর ফেসবুকে পবিত্র কাবা শরীফ নিয়ে ব্যঙ্গচিত্র পোস্ট দেয়ার অভিযোগে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) মামলায় গ্রেফতার নাসিরনগর উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের হরিণবেড় গ্রামের জগন্নাথ দাসের ছেলে রসরাজ (৩০) দাসের ফাঁসির দাবিতে উত্তাল হয়ে ওঠে নাসিরনগর উপজেলা।
পরদিন (৩০ অক্টোবর) মাইকিং করে সমাবেশ ডাকে দুটি ইসলামী সংগঠন। সমাবেশ শেষ হওয়ার পরপরই দুষ্কৃতকারীরা নাসিরনগর উপজেলা সদরে হামলা চালিয়ে অন্তত ১০টি মন্দির এবং শতাধিক ঘর-বাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাট করে।
এরপর ৪ নভেম্বর ভোরে ও ১৩ নভেম্বর ভোরে দুষ্কৃতকারীরা আবারও উপজেলা সদরে হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্তত ৬টি ঘর-বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। এসব ঘটনায় নাসিরনগর থানায় পৃথক ৮টি মামলা দায়ের করা হয়। মামলাগুলোতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতাসহ ১০৬ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।