আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, একটি মতলবি মহল চক্রান্ত করছে শেখ হাসিনাকে নিঃশেষ করে দিতে। ষড়যন্ত্রই তাদের হাতিয়ার। ষড়যন্ত্রের হাতিয়ার নিয়েই তারা এগিয়ে যাচ্ছে। মুখে তারা গণতন্ত্রের কথা বললেও ষড়যন্ত্রই তাদের কাজ। ষড়যন্ত্র করেই তারা শেখ হাসিনাকে হটাতে চায়।
শুক্রবার রাজধানী ঢাকার ৩/এ সড়কের দলীয় কার্যালয়ে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। আগামী ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের জনসভা সফল করার লক্ষ্যে আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ঈর্ষণীয় জনপ্রিয়তায় শেখ হাসিনা এখন ধরাছোঁয়ার বাইরে। পার্টির চেয়েও তার উচ্চতা অনেক বেশি। শেখ হাসিনার উন্নয়ন সারা বিশ্বের বিস্ময়। উন্নয়নের রোল মডেল।
তিনি বলেন, ১৯৮১ সালের চেয়ে শেখ হাসিনা এখন শতগুণ শক্তিশালী। নির্বাচনের মাধ্যমে তাকে পরাস্ত করা বা হারিয়ে দেওয়া যাবে না। নারায়ণগঞ্জের নির্বাচনই তার প্রমাণ।
তিনি আরও বলেন, অন্তর্ভেদী ও দূরদর্শিতায় শেখ হাসিনা যতই জনপ্রিয় হচ্ছেন, ততই তার শত্রু বাড়ছে। জীবন ঝুঁকির মধ্যেই চলতে হচ্ছে তাকে। বিমানের যান্ত্রিক দুর্ঘটনা নিছক দুর্ঘটনা নয়। নতুন বিমানের নাট-বল্টু ঢিলা থাকবে এটা মানা যায় না। শেখ হাসিনাকে জীবনে শেষ করে দিতেই এটা ঘটানো হয়েছে। এটা ২০তম ষড়যন্ত্রের ফল। এর আগে আরও ১৯ বার চক্রান্ত করে তাকে মেরে ফেলার চেষ্টা চালানো হয়।
আওয়ামী লীগের নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক বলেন, অসম্ভব জনপ্রিয়তার অধিকারী জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে নির্বাচনের মাধ্যমে পরাজিত করা সম্ভব ছিল না বলেই ১৯৭৫ সালে তাকে সপরিবারে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। বঙ্গবন্ধুকে যেমন নির্বাচনে হারানো সম্ভব ছিল না, তেমনই শেখ হাসিনাকেও পরাস্ত করা যাবে না। এই চিন্তা থেকেই ষড়যন্ত্রের পথ বেছে নিয়েছে মতলবিরা।
দুনিয়াব্যাপী টেররিজমের বিস্তার প্রসঙ্গে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, তারা কখন কোথায় হানা দেবে তা বলা যায় না। এদের ডালপালা বিস্তৃত হচ্ছে। কল্যাণপুরে জঙ্গি দমনের অভিযান নিয়ে আত্মসন্তুষ্টির কারণ নেই। সোলাকিয়া ও হলি আর্টিজান থেকে আমরা সম্পূর্ণভাবে বেরিয়ে আসতে পারিনি। তার প্রমাণ কল্যাণপুর ও আশকোনার ঘটনা। জনগণকে সঙ্গে নিয়েই এই অশুভ শক্তিকে পরাজিত করতে হবে।
বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের জনসভা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই জনসভা হবে স্মরণাতীতকালের ঐতিহাসিক ও সুশৃঙ্খল। এই জনসভায় শৃঙ্খলার বিষয়কে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। জনসভার দিনে ১০ জানুয়ারি ঢাকার সব রাজপথ মিশে যাবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মোহনায়।
তিনি আরও বলেন, এদিন রাজপথে যানজট সহনীয় পর্যায়ে রাখতে হবে। মিছিলের জন্য পুরো রাস্তা যাতে দখল হয়ে না যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। ওই দিন রাস্তার একপাশ থাকবে ফাঁকা। এই পাশ দিয়ে দিয়ে যানবাহন চলাচল করবে এবং অন্যপাশ দিয়ে মিছিল যাতায়াত করবে। ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর দিনে সুন্দর র্যালি হয়েছে। তবে উৎসবের কারণে জনগণের দুর্ভোগও হয়েছে যথেষ্ট। ছাত্রলীগের দায় দায়িত্ব আমাদের নিতে হবে। ওই দিন সবুজবাগে ছাত্রলীগের কর্মীরা যাত্রীদের নামিয়ে গণপরিবহনের বাস দখলে নেয়। আমরা তাদের তাদের শাস্তি দিয়েছি।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, দলকে কোন্দলমুক্ত করে সুসংগঠিত শক্তি হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। এজন্য সংশোধিত হতে হবে। যারা সংশোধিত হবে না তাদের দল থেকে বের করে দিতে হবে। তাদের বহিষ্কার করা হবে।
তিনি বলেন, গুটি কয়েকের কাছে পুরোদল জিম্মি হতে পারে না। কোনো অবস্থাতেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে ম্লান করা যাবে না। আমরা তা হতে দেব না।
মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম। সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মোল্লা মো. আবু কাওছার। এ সময় আওয়ামী লীগ নেতা বিপ্লব বড়ুয়া, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ও জাতীয় সংসদ সদস্য পংকজ দেবনাথ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।