বানারীপাড়ায় বাস ও মাহেন্দ্র-আলফার সংঘর্ষে দুই নারী যাত্রীসহ ৩জন নিহত ও এক শিশু গুরুতর আহত হয়েছে। শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে বানারীপাড়া-বরিশাল সড়কের বানারীপাড়ার রায়েরহাট ব্রিজের অদূরে বরিশালগামী মাহেন্দ্র-আলফার চালক একটি কুকুরকে বাঁচাতে গিয়ে বিপরীত দিক থেকে আসা যাত্রীবাহী বাস’র(জোনাকী) সঙ্গে মাহেন্দ্র-আলফার মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই মাহেন্দ্র-আলফা যাত্রী উপজেলার বাইশারী গ্রামের হাবিবুর রহমানের মেয়ে ও ঝালকাঠির গাভা রামচন্দ্রপুর গ্রামের জহিরুল ইসলাম মানিকের স্ত্রী ফাতেমা(৩৫) ও পৌর শহরের ৮ নং ওয়ার্ডের কবির হোসেনের স্ত্রী নূপুর(৩০) নিহত হন। আশংকাজনক অবস্থায় মাহেন্দ্র-আলফার চালক বরিশাল বিমানবন্দর থানার মাধবপাশা ইউনিয়নের বাদলা গ্রামের রুহুল আমিন গাইন ও নিহত ফাতেমার শিশু পুত্র আবু বকর হামিম(৫)কে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে পাঠানো হলে চালক মারা যায়। সেখান থেকে হামিমকে আশংকাজনক অবস্থায় ঢাকায় রেফার্ড করা হয়। চালক রুহুল আমিনকে শেবাচিমের আইসিউতে রাখা হয়েছিল।
থানার অফিসার ইনচার্জ মো. সাজ্জাদ হোসেন জানান, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে তিনি তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থলে ছুঁটে গিয়ে আহত ৪ যাত্রীকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক দুই নারী যাত্রীকে মৃত ঘোষণা করলে আশংকাজনক অবস্থায় অপর দুইজনকে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে পাঠান। দূর্ঘটনার ফলে সড়কে যানজটের সৃষ্টি হলে পুলিশ যান চলাচল স্বাভাবিক করে দেয়। এ ব্যপারে থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
ঘাতক বাসটিকে আটক করতে পারলেও চালক পালিয়েছে। নিহত ফাতেমার বাবা হাবিবুর রহমান মুন্সী জানান উপজেলার বাইশারী গ্রামে তাদের বাড়িতে বেড়ানো শেষে ফাতেমা শিশুপুত্র হামিমকে নিয়ে সীমান্তবর্তী ঝালকাঠির গাভারামন্দ্রপুর গ্রামে স্বামীর বাড়ি ফিরে যাচ্ছিলেন। ডায়েরী রোগে আক্রান্ত হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধিন পৌর শহরের ৮ নং ওয়ার্ডের কবির হোসেন জানান ওই সময় তার স্ত্রী নূপুর মাদ্রাসায় সন্তানের জন্য খাবার নিয়ে যাচ্ছিলেন। দূর্ঘটনায় নিহত স্ত্রীর নিথর দেহের পাশ থেকে হেটে গিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জরুরী বিভাগে শরীরে ডায়েরিয়ার স্যালাইন নিচ্ছিলেন কবির হোসেন। ঘুর্নাক্ষরেও তিনি টের পাননি- যে হাসপাতালে তিনি স্যালাইন দিচ্ছেন সেই হাসপাতালে মাত্র কয়েক হাত দূরে তার স্ত্রীর লাশ রয়েছে। স্থানীয়রা তার স্ত্রীকে চিনতে পেরে স্যালাইন অবস্থায় তাকে এনে দেখানোর পরে লাশ দেখে তিনি কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। এসময় হাসপাতালে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।