শনিবার , ২ ডিসেম্বর ২০১৭ | ৭ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. Featured
  2. অন্যান্য খেলার সংবাদ
  3. অন্যান্য ধর্ম
  4. অপরাদ
  5. অর্থনীতি
  6. অলটাইম নিউজ লেটার
  7. আইটি টেক
  8. আইন – আদালত
  9. আইন শৃংখলা বাহিনী
  10. আন্তর্জাতিক
  11. আবহাওয়া বার্তা
  12. ইসলাম
  13. উদ্যোগ এবং পরিবর্তন
  14. ওয়েবসাইট
  15. কবিতা

পাহাড়ে শান্তি ফেরেনি ২০ বছরে

প্রতিবেদক
Alltime BD News24 .com
ডিসেম্বর ২, ২০১৭ ২:২৯ পূর্বাহ্ণ

পার্বত্য শান্তিচুক্তির দুই দশক পরও তিন পার্বত্য জেলায় কাঙ্ক্ষিত শান্তি ফিরে আসেনি। বরং অব্যাহত সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও জাতিগত বিদ্বেষের কারণে পার্বত্য জনপদে সাধারণ মানুষের জীবন বিপন্ন হয়ে পড়েছে। শান্তিচুক্তির অধিকাংশ ধারা বাস্তবায়ন হলেও ভূমি জরিপসহ কয়েকটি ইস্যুতে সরকার ও জনসংহতি সমিতির মধ্যে দূরত্ব বাড়ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পার্বত্য জেলাগুলোতে বিদ্যমান সশস্ত্র গ্রুপগুলোর আধিপত্য বিস্তার, চাঁদাবাজি ও পারস্পরিক দ্বন্দ্বের কারণে পাহাড়ের পরিবেশ দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে। নিজেদের স্বার্থের দ্বন্দ্বে শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরকারী জনসংহতি সমিতি ভেঙে এখন চার টুকরা। এই চার সংগঠনের প্রভাবিত এলাকায় সাধারণ মানুষ নিষ্পেষিত জীবন-যাপন করছে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সূত্রমতে, চুক্তি স্বাক্ষরের পর থেকে গত ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সামাজিক অপরাধের বাইরে তিন পার্বত্য জেলায় খুন হয়েছেন ২ হাজার ১৯৯ জন। অপহূত হয়েছেন ২ হাজার ৩৯২ জন। নিহতদের অধিকাংশই বাঙালি। এর মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ পাহাড়ি। বাঙালিরা খুন হয়েছেন সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ও চাঁদাবাজির জের ধরে।

অন্যদিকে পাহাড়িদের অধিকাংশই নিহত হয়েছেন দলীয় কোন্দলের কারণে। সূত্র জানায়, শান্তিচুক্তি হলেও তিন পার্বত্য জেলায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য কোনো উন্নতি হয়নি। আগে সেখানে পাহাড়ি গ্রুপগুলোর কাছে জনপ্রতি অস্ত্র ছিল না। এখন তাদের কাছে উদ্বৃত্ত অস্ত্র রয়েছে। তারা সেগুলো দেশের অন্য এলাকায় কালোবাজারে বিক্রি করে। ২০১৪-১৫ সালে ভারতের মিজোরামে পার্বত্য জেলাগুলোর জন্য আনা বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ধরা পড়ে। জনসংহতি সমিতির অন্তর্দ্বন্দ্বের কারণে এসব অস্ত্র ধরা পড়ে বলে সূত্র জানায়।

বিশেষজ্ঞ মতে, তিন পার্বত্য জেলায় প্রায় ১৫ লাখ মানুষের মধ্যে ৪৮ শতাংশ বাঙালি। বাকি ৫২ শতাংশ বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর অধিবাসী। অথচ ৪৮ শতাংশ বাঙালিকে পার্বত্য জেলা থেকে অন্যত্র সরিয়ে দিতে এবং পার্বত্য তিন জেলা পাহাড়িদের একক আধিপত্যে আনতে কাজ করছেন জনসংহতি সমিতিরি নেতারা। সূত্র জানায়, পার্বত্য জেলাগুলোতে অধিকাংশ বিরোধ জমি নিয়ে। শান্তিচুক্তির আলোকে সরকার ভূমি কমিশন গঠন করে ২০০১ সালে। কমিশন নিয়ে উপজাতীয় নেতাদের আপত্তির কারণে সরকার গত বছর ভূমি কমিশন আইন সংশোধন করে। তারপরও কমিশন কাজ করতে পারছে না। ভূমি কমিশন কার্যকর হোক এটা তারা চায় না।

পার্বত্য সূত্রগুলো জানায়, পার্বত্য জেলা থেকে বাঙালিদের উচ্ছেদের জন্য সরকারি খাস জমিতে বসবাসকারী বাঙালিদের জমিকে নিজেদের জমি দাবি করে পাহাড়িরা। রাজনৈতিক এজেন্ডার অংশ হিসেবেই তারা এটা করছে। চুক্তির আলোকে সরকার ভূমি জরিপ করতে চাইলেও সেটা করতে দিচ্ছে না পার্বত্য গোষ্ঠীগুলো। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্র জানায়, পার্বত্য শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরের পর দুর্গম অঞ্চলগুলো থেকে সেনা ক্যাম্পগুলো প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। এখন শুধু রোড সাইড ক্যাম্পগুলো বহাল রয়েছে। তারপরও সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, খুন, অপহরণ কমছে না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাঙামাটি সদরের একজন স্কুল-শিক্ষক বলেন, পাহাড়ে সেনাবাহিনী না থাকলে উপজাতীয় সন্ত্রাসীরা বাঙালিদের মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর মতোই কচুকাটা করে তাড়িয়ে দেবে। তিন জেলায় সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকবে না। কোনো সরকারি প্রশাসন থাকবে না যা তারা সব সময় চায়। সূত্র জানায়, তিন পার্বত্য জেলায় প্রতিটি অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের পেছনেই রয়েছে চাঁদাবাজি।

চাষাবাদ, গাছ কাটা, বাগান তৈরি, পণ্য পরিবহনসহ প্রতিটি ক্ষেত্রেই সশস্ত্র গ্রুপগুলোকে চাঁদা দিতে হয়। কাঙ্ক্ষিত চাঁদা না পেলে তারা খুন, অপহরণসহ নানা অপকর্মে লিপ্ত হয়। উল্লেখ্য, গত বুধবার জনসংহতি সমিতির চেয়ারম্যান সন্তু লারমা জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে ‘বাঙালিদের পার্বত্য চট্টগ্রামের বাইরে পুনর্বাসন করা হয়নি’ বলে সরকারের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। অথচ শান্তিচুক্তির কোনো ধারা-উপধারাতেই বাঙালিদের অন্যত্র পুনর্বাসনের উল্লেখ নেই।

পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, পার্বত্য শান্তিচুক্তির ৭২টি ধারার মধ্যে ৪৮টি সরকার বাস্তবায়ন করেছে। বাকিগুলোও বাস্তবায়নের প্রক্রিয়াধীন। সরকারের পক্ষ থেকে একটিই চাওয়া ছিল, সেটি হচ্ছে, অস্ত্র সমর্পণ করে পাহাড়ে শান্তি ফিরিয়ে আনা। কিন্তু সেটিই করা যাচ্ছে না রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ায় থাকা সশস্ত্র সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোর কারণে। পাহাড়ের প্রকাশ্য সংগঠনগুলো এসব সশস্ত্র সংগঠনগুলোকে মদদ দেয় বলে সূত্র জানায়।

(Visited ১২ times, ১ visits today)

সর্বশেষ - অর্থনীতি