অস্বাভাবিকভাবে ডলারের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় আমদানি ব্যয় ব্যাপক বেড়ে গেছে। এতে বিপাকে পড়েছেন আমদানি খাত সংশ্লিষ্টরা।
মিথ্যা তথ্য দিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা বাজারে কারসাজির অভিযোগে ২০টি বাণিজ্যিক ব্যাংককে জরিমানা করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ইতিমধ্যে এসব ব্যাংককে কারণ দর্শাও নোটিস দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। প্রধান নির্বাহীদের কাছে লেখা বাংলাদেশ ব্যাংকের এই চিঠির জবাব দিতে তিন দিন সময় দেওয়া হয়েছে। আগামী রবিবার এ সময় শেষ হবে। এ সময়ের মধ্যে সন্তোষজনক জবাব দিতে না পারলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোকে এক লাখ থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা হতে পারে বলে জানা গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, বৈদেশিক মুদ্রাবাজার স্থিতিশীল রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে ব্যাংকগুলোকে ডলার সরবরাহ করা হচ্ছে। এ পর্যন্ত প্রায় ৭০ কোটি ডলার বাজারে ছাড়া হয়েছে। তারপরও বাজার স্থিতিশীল হচ্ছে না। ফলে বাংলাদেশ ব্যাংক ওই ব্যাংকগুলোর বৈদেশিক মুদ্রার লেনদেন কার্যক্রমের ওপর তদারকি বাড়িয়েছে।
কয়েক দিন আগে বাংলাদেশ বাংকের এক তদন্তে বেরিয়ে আসে কয়েকটি ব্যাংক বাজারে গ্রাহকদের জিম্মি করে অনেক বেশি দরে ডলার বিক্রি করেছে। এভাবে বাজার অস্থিতিশীল করা হয়েছে। কয়েকটি ব্যাংক এখনো এমন ঘটনা ঘটাচ্ছে বলে জানা গেছে। সূত্র জানায়, ২২ নভেম্বর একটি ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে ডলারের দর দিয়েছে ৮১ টাকা ৮০ পয়সা। কিন্তু করপোরেট গ্রাহকদের জিম্মি করে বাজারে বিক্রি করেছে ৮৪ টাকা ৭৫ পয়সায়। আরেকটি ব্যাংক বিক্রি করেছে সাড়ে ৮৪ টাকা করে। অথচ বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে দাখিল করা রিপোর্টে রেট দেখানো হয়েছে ৩ টাকা কম। এসব অসঙ্গতির তথ্য আমলে নিয়ে ব্যাংকগুলোকে কারণ দর্শাও নোটিস দেওয়া হয়েছে। গত সপ্তাহে এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সভাপতিত্বে উচ্চপর্যায়ের একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকেই কারসাজির অভিযোগে বাজার অস্থিতিশীল করার দায়ে অভিযুক্ত ব্যাংকগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এতে তিনটি বিদেশি ও ১৭টি স্থানীয় ব্যাংকের সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে জানা গেছে। হঠাৎ ডলারের মূল্য বৃদ্ধিতে আমদানি ব্যয় বেড়েছে। ফলে বিভিন্ন ধরনের পণ্য আমদানির এলসি খোলার পরিমাণ কমেছে। কেননা বাজার স্থিতিশীল হলে ডলারের মূল্য কমে আসবে। আর সেই কমতি মূল্যে এলসি খোলা হলে আমদানি ব্যয় বর্তমানের তুলনায় কমবে। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন ডেপুটি গভর্নর নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, যেসব ব্যাংক কারসাজির সঙ্গে জড়িত তাদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। তাদেরকে নোটিস দেওয়া হয়েছে। সঠিক জবাব না পেলে জরিমানা করা হবে। তিনি আরও বলেন, এ ধরনের ঘটনা দেশের বৈদেশিক মুদ্রাবাজারের জন্য অশনিসংকেত। এ জন্য এটাকে হালকাভাবে নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।