“অবরোধ শ্যাষ। মোরা জাল নৌকা লইয়্যা গাঙ্গে মাছ ধরতে নামছি, জালে এ্যাকছের মাছ বাজে, মোরা ২২ দিন পোলাপান লইয়্যা কষ্টে আলহাম। এ্যাহন আর কষ্ট নাই, সরকার ভালোই হরছে অবরোধ দিয়া, অবরোধ না দিলে মোরা এ্যাতো মাছ পাইতাম না”। এ কথা বলেছেন পায়রা নদীতে মাছ শিকারী জেলে রহমান গাজী, আলম তালুকদার, মনির হাওলাদার, বারেক জোমাদ্দার, মোজাম্মেল, আমিনুর, সোহরাফ ও জব্বার গাজীসহ আরো অনেকে।
ইলিশের প্রজনন মৌসুম গত ২২ অক্টোরব শেষ হয়। ওইদিন রাত বারোটার পর থেকে উপকূলের জেলেরা তাদের জাল নৌকা ও ট্রলার নিয়ে নেমে পরেছে নদী ও সাগরে। তাদের জালে ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে রুপালি ইলিশ।
অক্টোবর থেকে ২২ অক্টোবর পর্যন্ত এ ২২ দিন ইলিশ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল সরকার। এ সময়ে উপকূলীয় বরগুনা, পাথরঘাটা, বামনা, বেতাগী, আমতলী ও তালতলীর জেলেরা সাগর ও সাগর সংলগ্ন বিষখালী, বলেশ্বর, পায়রা নদীতে মাছ ধরেনি। ২২ অক্টোবর রাত সাড়ে বারোটার পর থেকে নদীতে জেলেরা মাছ ধরতে নেমেছে। জেলেদের জালে প্রচুর ছোট ও বড় ইলিশ ধরা পড়ছে। ইলিশের দাম একটু কম থাকায় অস্বস্তিতে জেলেরা।
সাগর মোহনা আশারচরের জেলে শাহাজাদা মিয়া বলেন, সাগরে প্রচুর ইলিশ পড়ছে। গতকাল রাতে আমার খুডা জালে ৮০ কেজি মাছ ধরা পড়ছে।
সখিনা গ্রামের জেলে নজরুল ইসলাম বলেন, সাগর সংলগ্ন আশারচরে অনিবন্ধিত প্রায় ৩০ হাজার জেলে রয়েছে। যারা দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা জেলে। এ জেলেদের জালে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে।
আশারচরের মন্টু বিশ্বাস বলেন “মুই খুডা জালে ৬০ কেজি মাছ পাইছি, এ্যাত মাছ আগে পাইনায়”।
তালতলীর গাবতলী ভাই ভাই মৎস্য আড়ৎ মালিক মোঃ জলিল ফরাজী বলেন, পায়রা নদীতে জেলেদের জালে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়ছে। গতকাল রাতে ৯ জেলের জালে ১১০ কেজি মাছ ধরা পড়েছে।
বরগুরা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো: ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, প্রজনন মৌসুম শেষ। প্রজনন মৌসুমে জেলেরা মাছ না ধরায় নদীতে প্রচুর পরিমাণে ইলিশ রয়েছে। জেলেদের জালে প্রচুর ইলিশ ধরা পরছে। তিনি আরো বলেন ১ নভেম্বর থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত আট মাস জাটকা মাছ ধরা নিষিদ্ধ। এখন প্রচুর জাটকা মাছ ধরা পড়লেও কিছুই করার নেই।