সম্প্রতি বাসে নারীদের সাথে ঘটে যাওয়া বিস্ময়কর কয়েকটি ঘটনার খবর পাওয়া গেছে। ভদ্র চেহারার মানসিক বিকৃত কিছু মানুষজন শহরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন এমনটাই অভিযোগ করেছেন কয়েকজন নারী।
জানা গেছে, বাসে নারীদের পেছনে বসে কৌশলে জামা ও শাড়িতে ব্লেড চালিয়ে কেটে দিয়ে ‘বিকৃত সুখ’ অর্জন করছেন বিকৃত রুচির মানুষেরা।
ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, আজকে ভার্সিটি থেকে আসার সময় রামপুরা থেকে রাইদা বাসে উঠি আমি আর আমার ফ্রেন্ড বাসায় আসার জন্য। অন্য সব লোকাল বাস গুলো থেকে রাইদা একটু ভালো, সিটিং সার্ভিস যাকে বলে। যাই হোক বাসে উঠে বসি। প্রায় মুগদা আসার পর আমার পাশের লোকটা নেমে যায়।
তিনি লিখছেন, আমার দুই সিটে আমি একা। বাসের সিটটা একটু নড়া চড়া করতেছিলো। ব্রেক করলে সিটটা সামনে চলে যাচ্ছিল। হতেই পারে পাবলিক বাস।
পিঠের সিট আর বসার সিট এর জয়েন্ট দুইয়ের মাঝে ফাক হয়ে যাচ্ছিলো বারবার।
হঠাৎ মনে হলো ঐ ফাঁক দিয়ে পেছনের লোকটা হাত দেওয়ার চেষ্টা করছে। বুঝতে পেরে আমি পিছনে লোকটার দিকে তাকায় দেখলাম, বয়স ৪৫ এর বেশিহবে। আমার তাকানো দেখে সে কিছুই বুঝলো না ভাব। আমি সরে পাশের সিটে গিয়ে বসলাম।
ওই শিক্ষার্থী লিখেছেন, বাস থেকে নামার পর আমার ফ্রেন্ড বলতেছে তোর জামা ছিড়লো কেমনে? তখন দেখি এ অবস্থা! আমি তো থ! তখন বুঝলাম ওই যে ওই সময় মনে হয়েছিল ওই সময়ই তাইলে!
তারপর রিকশায় আমার ভেবে পাইনা কি পাইলো এটা করে,কেনো করলো? তারপর ভাবলাম পায়জামাটা দেখি তো, তখন হাত দিয়ে দেখি পায়জামা ও এত কিছু কখন কেমনে করলো। আমি কিচ্ছু টের কেমনে পাইলাম না। হাত পা কাঁপা শুরু হয়ে গেছে তারপর…
এরকম ঘটনা একটি হলে খুব স্বাভাবিক ছিল। মোটেও স্বাভাবিক ঘটনা নয় এসব। কেননা একজন ব্যক্তিই যে এমনটা করছেন তাও কিন্তু নয়। এরকম একাধিক ঘটনার খবর পাওয়া গেছে। আর ভুক্তভোগীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ওইসব লোকদের চেহারা দেখে মোটেও পকেটমার মনে করা সম্ভব না। কেননা তারা পকেটমারার জন্য এসব করছে না।
এক নারী সাংবাদিক সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, সেদিন বসুন্ধরার গেটে বাস থেকে নামলাম, দেখি আমার সামনে এক মেয়ে খুব বিব্রত হয়ে রিকশা খুঁজছে। ভাল করে তাকিয়ে দেখি তার সাদা জামা ব্লেড কিনবা এনটি কাটার জাতীয় ধারাল অস্ত্র দিয়ে অনেক জায়গায় কেটে দেওয়া।
সেজন্য মেয়েটি এত বিব্রত বোধ করছে। ঠিক তার ৫ দিন পরে আমি অফিস থেকে ফিরছি, পরনে ছিল শাড়ি। পেছনের সিট থেকে কেউ আমার কোমরে হালকা স্পর্শ করছিল। আমি কয়েকবার হাত দিয়ে সরিয়ে দিলাম।
ভেবেছিলাম পেছনের ভদ্রলোক পা তুলে বসেছে তাই তার পায়ের নখ সিটের ফাঁক দিয়ে আমার কোমরে লাগছে। কিন্তু না, বাসায় ফিরে দেখি আমার শাড়ির ১০/১২ জায়গায় ব্লেড দিয়ে কেটে দেওয়া।
আজ আরেকজনের কাছে শুনলাম আরেক মেয়ের জামা- পাজামা সব কেটে দিয়েছে বাসের কেউ। অদ্ভুত ঘটনা! শহরে নিশ্চয়ই এমন কোনও বিকৃত মানসিকতার সাইকো ঘুরে বেড়াচ্ছে, যে নারীদের ছিন্ন বস্ত্রে দেখে, বিব্রত হতে দেখে বিকৃত সুখ পাচ্ছে। আমি সেদিন পেছনের ছেলেটিকে একঝলক দেখেছিলাম। তাকে দেখে আর যাই হোক পকেটমার মনে হয়নি।
ঘটনাগুলো সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করার পর জানা যাচ্ছে অনেকেই এরকম ঘটনার মুখোমুখি হয়েছেন। অন্তত সোশ্যাল মিডিয়ার একটি পেইজে শত শত মন্তব্য পাওয়া গেছে, যাদের অধিকাংশই ভুক্তভোগী।