‘ব্লু হোয়েল’ নিয়ে সপ্তাহখানেক ধরে দেশের সামাজিক মাধ্যম ও গণমাধ্যমে যে আলোচনা-সমালোচনা চলছে, তার প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশ থেকে গেমটির ইন্টারনেট সার্চে। গুগলের সর্বশেষ প্রকাশিত তথ্য অনুসারে, বিশ্বব্যাপী অনলাইনে এই গেমটি সবচেয়ে বেশি খোঁজা হয়েছে যেসব দেশ থেকে, বাংলাদেশ সে তালিকার তৃতীয় অবস্থানে আছে। গত ১২ মাসে বিশ্বব্যাপী ইন্টারনেটে কী কী খোঁজা হয়েছে, তার উপর ভিত্তি করে ‘গুগল ট্রেন্ড রিপোর্ট’ নামের এ রিপোর্টটি তৈরী করেছে গুগল।
তালিকায় প্রথম স্থানে আছে পাকিস্তান। ভারত ও নেপালের অবস্থান যথাক্রমে চতুর্থ ও পঞ্চম।
ব্লু হোয়েলের কবলে বাংলাদেশের বরিশাল। গত ৩০ দিনের গুগল তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, বাংলাদেশের বরিশাল অঞ্চল থেকে সবচেয়ে বেশি মানুষ ইন্টারনেটে গেমটি খোঁজাখুঁজি করেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হতাশাগ্রস্থ তরুণ তরুণীরাই এ গেমটি বেশি খুঁজছে। আর গুগলের তথ্য বলছে, গত দু’মাসে ইন্টারনেটে এ গেমটি খোঁজার হার আশঙ্কাজনকভাবে বেশি।
‘ব্লু হোয়েল’ একটি ইন্টারনেটভিত্তিক গেম, যা গেমারকে ধারাবাহিকভাবে মৃত্যুর দিকে নিয়ে যায়। রাশিয়ান যে তরুণ এ গেমটি তৈরী করেছে, সে এখন জেল হাজতে। ১২ থেকে ২২ বছর বয়সী হতাশাগ্রস্থ তরুণ তরুণীদের লক্ষ্য করে গেমটি বানানো হয়েছে। ৫০ দিনে গেমটির ৫০টি পর্ব থাকে, প্রতিটি পর্বে একজন গেম প্রশাসকের নির্দেশে গেমারকে ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন কাজ করতে বলা হয়। বলা হয়ে থাকে, গেমটির ৫০ তম পর্বে অর্থাৎ একদম শেষ পর্বে গেম প্রশাসকের কাছ থেকে গেমারের প্রতি আত্নহত্যার ‘নির্দেশ’ আসে। গেমারকে সে ‘নির্দেশ’ অনুসারে আত্নহত্যা করতে হয়। ইতোমধ্যে গেমটি খেলে বিশ্বব্যাপী বেশ কয়েকজন তরুণের আত্নঘাতী হওয়ার খবর গণমাধ্যমে এসেছে।
বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক তরুণকে এ গেমটি খেলার অভিযোগে পুলিশ তাদের হেফাজতে নিয়ে কাউন্সেলিং করেছে। পরে পুলিশের ভাষ্যমতে, ওই ছাত্র তার ভুল বুঝতে পেরেছে এবং এই গেম কাউকে না খেলার পরামর্শ দিয়েছে।
তবে বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞরা গেমটি নিয়ে অযথা আতঙ্কিত না হয়ে তরুণ-তরুণী ও তদাদের অভিবাকদের আরও বেশি সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁনের নির্দেশে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠান(বিটিআরসি) দেশের ইন্টারনেট থেকে গেমটির লিংক মুছে দেওয়ার চেষ্টা করছে। এ কাজে তাদের সহায়তা করছে আইসিটি ডিভিশনও।