স্পেনের কাতালোনিয়ার সম্ভাব্য স্বাধীনতা ঘোষণা থামিয়ে দিতে স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলটির সংসদের আগামী সোমবারের (৯ অক্টোবর) অধিবেশন স্থগিত করেছেন কেন্দ্রীয় সাংবিধানিক আদালত।
বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) আদালতের পক্ষ থেকে এই আদেশ জারি হয়। আদেশে বলা হয়, কাতালোনিয়ার সংসদের আগামী সপ্তাহের শুরুর অধিবেশনে স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছে। এর পরও অধিবেশন আয়োজন হবে সংবিধান লঙ্ঘন।
সাংবিধানিক আদালতের এ আদেশ জারির আগেই প্রধানমন্ত্রী মারিয়ানো রাজয় কাতালোনিয়ার নেতৃত্বকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, কোনো ধরনের বিভক্তিমূলক ঘোষণা হবে অসাংবিধানিক এবং বেআইনি।
গত বুধবার (৪ অক্টোবর) জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে কাতালোনিয়ার প্রেসিডেন্ট কার্লেস পুইগডেমন্ট ইঙ্গিত দেন, জনগণের ভোট অনুযায়ী আগামী সপ্তাহের শুরুতে (সোমবার) তারা সংসদে স্বাধীনতা ঘোষণার প্রস্তাব ওঠাবেন, সেখানেই পরবর্তী যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
তারপরই প্রধানমন্ত্রী রাজয় ওই হুঁশিয়ারি দেন। এরপর সংসদ অধিবেশনেই এই স্থগিতাদেশ দিয়ে বসলেন কেন্দ্রীয় সাংবিধানিক আদালত।
গত রোববার (১ অক্টোবর) অনুষ্ঠিত গণভোটে পুলিশি বাধা ও রক্তারক্তি হওয়ায় ৩ অক্টোবর ধর্মঘট ডাকে কাতালানরা। এই ধর্মঘটে সাড়া দিয়ে আঞ্চলিক রাজধানী বার্সেলোনাতেই রাস্তায় নামে ৭ লাখ মানুষ। আদালতের এই নিষেধাজ্ঞা এবার নতুন করে উত্তেজনা ছড়াবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
স্পেনের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ভূমধ্যসাগর তীরবর্তী প্রায় ২০ হাজার বর্গ কিলোমিটারের কাতালোনিয়ায় রয়েছে ৭৫ লাখ মানুষের বসবাস, যা স্পেনের মোট জনগণের ১৬ শতাংশ। স্পেন থেকে যা রফতানি হয়, তার ২৫ দশমিক ৬ শতাংশ রফতানি হয় এই অঞ্চল থেকে। স্প্যানিশ জিডিপিতে কাতালোনিয়ার অবদান ১৯ শতাংশ। স্পেনে বিদেশি বিনিয়োগের ২০ দশমিক ৭ শতাংশ যায় এই অঞ্চলে।
নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতির কাতালানরা সর্বোচ্চ স্বায়ত্তশাসনের অধিকার ভোগ করলেও সাংবিধানিকভাবে পৃথক রাষ্ট্র হতে চায়। এখানকার আঞ্চলিক সরকার গত প্রায় পাঁচ বছর ধরেই আলাদা রাষ্ট্র গঠনের চাপ হজম করছে জনগণের। ২০১৫ সালের আঞ্চলিক নির্বাচনে স্বাধীনতাকামী দল বিজয়ী হলে এই চাপ আরও স্পষ্ট হয়।
তবে স্বাধীনতার দাবিতে কাতালানরা সরব হওয়ার পর থেকেই বিরোধিতা করে আসছে