দক্ষিণ আফ্রিকায় সিরিজের প্রথম টেস্টের প্রথম দিনটা হাপিত্যেশ করেই কাটাতে হলো বাংলাদেশকে। সারা দিনে কোনো উইকেট পাননি কোনো বোলার। দিনের একমাত্র উইকেটটিও মুফতে পাওয়া। ১ উইকেটে ২৯৮ রানে দিন শেষ করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
টেস্টে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ স্কোরারের নাম সাকিব আল হাসান। সেরা বোলিংয়ের রেকর্ডটা অবশ্য তাঁর অধিকারে নেই। কিন্তু বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার বিশ্রাম নেওয়ায় পচেফস্ট্রুমে বাংলাদেশের বোলারদের ওপর দিয়েই ঝড় গেল বেশি।
১৮৮ টেস্ট উইকেটের অভিজ্ঞতা নিয়ে সাকিব আপাতত দেশে ছুটি কাটাচ্ছেন। দলে আর একজন বোলারেরই টেস্টে ৫০-এর বেশি উইকেট আছে। বাংলাদেশ সেই তাইজুল ইসলামকেও আজ একাদশের বাইরে রেখে মাঠে নেমেছে। তিনজন পেসার ও অফ স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজকে নিয়ে মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ। দক্ষিণ আফ্রিকার মাঠে এটাই স্বাভাবিক হওয়ার কথা। সবুজাভ উইকেটে তিন পেসার গতির ঝড় কিংবা সুইংয়ের বিভ্রম জাগাবেন আর স্পিনার মাঝেমধ্যে এসে পেসারদের বিশ্রামের সুযোগ দেবেন।
পিচ না দেখে থাকলে, টসে জিতে বাংলাদেশ ফিল্ডিং বেছে নেওয়ার পর পেস-বান্ধব উইকেট বলেই মনে হচ্ছিল। সাদাটে উইকেট দেখেও এমন সিদ্ধান্ত দেখে বিস্মিত হয়েছেন প্রতিপক্ষ অধিনায়কও। ষষ্ঠ ওভারেই মিরাজের হাতে বল দেখে মাথা চুলকাতেই হলো। দুটি প্রশ্নও জাগল। এক, যদি পঞ্চম ওভারেই স্পিনার আনতে হয়, তবে দলে কেন মাত্র একজন স্পিনার। দুই, যদি উইকেটে পেসারদের জন্য কিছু না-ই থাকে, তবে কেন ব্যাটিং করল না বাংলাদেশ।
উত্তর খুঁজলে দুটি প্রশ্নেরই একটি উত্তর পাওয়া যাচ্ছে, নেতিবাচক ভাবনা! সে ভাবনার বহিঃপ্রকাশ পুরো দিনে। পেস বোলাররা বোলিং করছেন, কোনো আক্রমণাত্মক ফিল্ডার নেই ব্যাটসম্যানের আশপাশে। মেহেদী হাসান মিরাজকে দিয়ে দিনের এক-তৃতীয়াংশের বেশি বল করানো হলো। কিন্তু এই অফ স্পিনারের জন্য আক্রমণাত্মক ফিল্ডার ছিল খুব কম সময়। দিনের শেষভাগেও দ্বিতীয় নতুন বলও মিরাজের হাতে তুলে দেওয়ার কোনো যুক্তি খুঁজে পাওয়া গেল না।
বোলাররা নিজেরাও কোনো উত্তর খুঁজে পেলেন না। কোনো পরিকল্পনার ছাপ নেই বোলিংয়ে। উইকেট থেকে কোনো বাড়তি সুবিধাও আদায় করতে দেখা গেল না। নিয়মিত বোলারদের ফাঁকফোকরে অনিয়মিতরা এসে বোলিং করেছেন। কিন্তু ‘গোল্ডেন হ্যান্ড’ নিয়ে হাজির হলেন না কেউই।
তা-ও ভালো ৯৯ রানে দাঁড়িয়ে একটু স্নায়ুচাপে ভুগছিলেন ডিন এলগার। ৯৯ রানে দাঁড়িয়ে দ্রুত এক রান নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সে রান নেওয়া সম্ভব নয় বলে যখন নিষেধ করে দিলেন, ততক্ষণে বড় দেরি হয়ে গেছে। নন-স্ট্রাইকিং প্রান্তে সময়মতো পৌঁছাতে পারলেন না এইডান মার্করাম। অভিষেকে ৯৭ রানে রান আউট হওয়ার ‘অনন্য’ এক অভিজ্ঞতা নিয়ে ফিরলেন প্রোটিয়া ওপেনার। ১৯৬ রানে থামল দক্ষিণ আফ্রিকার উদ্বোধনী জুটি।
চা-বিরতির আগের ওভারে মার্করাম ফিরে গেলেও লাভ হয়নি বাংলাদেশের। শেষ সেশনেও বোলাররা কোনো প্রভাব ফেলতে পারেননি। দ্বিতীয় উইকেটেও শতরানের জুটি গড়েছেন এলগার। এবার তাঁর সঙ্গী হাশিম আমলা (৫৮*)। এলগার অপরাজিত আছেন ১২৮ রানে। দ্বিতীয় দিনেও বাংলাদেশের বোলারদের ভোগান্তি বাড়াতে দুজন সর্বোচ্চ চেষ্টাই করবেন!