তুষার ইমরানের সেঞ্চুরির পর দ্বিতীয় দিন প্রথম ডাবল এর স্বপ্ন দেখাচ্ছিলেন মেহেদী হাসান। দ্বিতীয় রাউন্ডের দ্বিতীয় দিন মাঠে নেমেছিলেন ১৬৫ রান নিয়ে। কিন্তু তার স্বপ্ন গুঁড়িয়ে দেন বরিশালের স্পিনার মনির হোসেন। একে একে ৭ উইকেট নিয়ে খুলনাকে শেষ পর্যন্ত থামান ৪৪৪ রানে। খুলনার রানের চাকা থামাতে বরিশাল ব্যবহার করে তাদের ৯ বোলারকে। এর মধ্যে ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ের পর মনিরের বরিশাল বিভাগ অবশ্য সেই মান রাখতে পারেননি। ব্যাট হাতে জবাব দিতে নেমে এখন লড়ছে ফলোঅন এড়াতে। ৫৫ ওভার ব্যাট করে ১৭১ রান তুলতেই হারায় ৬ উইকেট। এখনো তারা পিছিয়ে আছে ২৭৩ রানে। ফলোঅন এড়াতে তৃতীয় দিন তাদেরকে আরো ৭৪ রান করতে হবে। বরিশালের হয়ে মান বাঁচাতে লড়ছেন রাফসান আল মাহমুদ ও নুরুজ্জামান।
ব্যাট করতে নেমে বরিশাল ৯১ রান তুলতেই তারা হারিয়ে বসে ছয়টি উইকেট। সেখান থেকে হাল ধরেছেন রাফসান আল মাহমুদ ও মো. নুরুজ্জামান। সপ্তম উইকেট জুটিতে তারা দু’জন সংগ্রহ করেছেন ৮০ রান। রাফসান ১২৪ বল খেলে ৮টি চার ও ১ ছক্কায় ৫৮ রানের অপরাজিত আছেন। তার সঙ্গে ৯৭ বল খেলে ২ চার ও সমান সংখ্যক ছক্কায় ৫২ রান করে অপরাজিত আছেন নুরুজ্জামান।
গতকাল বরিশাল ব্যাট করতে নেমে স্কোরবোর্ডে কোনো রান যোগ করার আগেই উইকেট হারায়। দলকে প্রথম উইকেট উপহার দেন মাশরাফি বিন মাশরাফি বিন মূর্তজা। তার বলে নুরুল হাসানের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন সায়েম। এরপর স্কোর বোর্ডে রান ২ যোগ হতেই আরো ২ উইকেট হারায় বরিশাল। খুলনার আরেক পেসার আল-আমিনের বলে জিয়াউর রহমানের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হন ফজলে রাব্বি ১ রান করে। এমনকি আল আমিনের আঘাতে ১৩ রানের মাথায় তৃতীয় উইকেট হারায় বরিশাল। তার দ্বিতীয় শিকার ২ রান করা বরিশালের উইকেটরক্ষক শামসুল ইসলাম। এরপর সালমান ও রাফসান প্রাথমিক বিপর্যয় সামাল দেয়ার চেষ্টা করেন ৩৯ রানের জুটি গড়ে। কিন্তু দলীয় ৫২ রানে ৩২ রান করা সালমানকে আউট করে জুটি ভাঙেন অধিনায়ক আবদুর রাজ্জাক। এরপর ৮৬ ও ৯১ রানে আল-আমিন ও সোহাগ গাজীকে হারায় বরিশাল। আল-আমিনের উইকেট নেন আব্দুর রাজ্জাক। আর সোহাগ গাজীকে ফেরান মেহেদী হাসান। সেখান থেকে দলের হাল ধরে দিন শেষ করেন রাফসান ও নুরুজ্জামান। বল হাতে দ্বিতীয় দিনে খুলনার আবদুর রাজ্জাক ও আল-আমিন ২টি করে উইকেট নিয়েছেন। ১টি করে উইকেট শিকার করেছেন মাশরাফি ও মেহেদী হাসান।
এর আগে ৩ উইকেট হারিয়ে ৩৪৮ রান তুলে প্রথম দিন শেষ করেছিল খুলনা। কিন্তু দ্বিতীয় দিন বাকি ৭টি উইকেট হারায় মাত্র ৯৬ রানে। মূলত বরিশালের বোলা মনির হোসেনের আঘাতেই খুলনার শক্তিশালী ব্যাটিং লাইন আপ ধসে পড়ে। কারণ এদিন সবকটি উইকেট নিয়েছেন একাই তিনি। জাতীয় লিগে ৯ উইকেট আছে আরও তিনজনের। রেকর্ড থেকে মনির হোসেন তাই বেশ দূরে। তবে জাতীয় লিগের দ্বিতীয় পর্বে খুলনার বিপক্ষে আজ ৮৫ রানে ৭ উইকেট নিয়ে বরিশালের বাঁহাতি স্পিনার করেছেন ক্যারিয়ার-সেরা বোলিং। মনির এ দিন মোহাম্মদ মিঠুনকে দিয়ে শুরু করেছিলেন। আর শেষ করেছেন আল আমিনকে এলবিডব্লিউ’র ফাঁদে ফেলে। জিয়াউর রহমান ও মাশরাফি বিন মূর্তজাকে পর পর দুই বলে আউট করে হ্যাটট্রিকের স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন। কিন্তু সেটি না হলেও তৃপ্তি নিয়ে মাঠ ছাড়েন তিনি।
চট্টগ্রামের রানের পাহাড়
রাজশাহীর শহীদ কামরুজ্জামান স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগ ও রাজশাহী বিভাগ। বৃষ্টির কারণে প্রথমদিন শুক্রবার এই মাঠে মাত্র ৪৩ ওভার খেলা হয়। এর মধ্যে ২ উইকেট হারিয়ে ৬৭ রান তুলে প্রথমদিন শেষ করেছিল চট্টগ্রাম। ১০ ক্রিজে ছিলেন তাসামুল হক ও তাকে ৮ রান করে সঙ্গ দিচ্ছিলেন ইয়াসির আলী। গতকাল তাদের শত রানের জুটি ধীরে ধীরে বড় সংগ্রহের পথে এগিয়ে যায় তারা। দুইদিনে মোট ১৩৯ ওভার খেলে চট্টগ্রামের সংগ্রহ ৪১৯ রান ৮ উইকেট হারিয়ে।
বগুড়া ও কক্সবাজারে দ্বিতীয় দিনের খেলা পরিত্যক্ত
খুলনা ও রাজশাহীতে ঠিকমত খেলা চললেও বগুড়া ও কক্সবাজারে খেলা হচ্ছে না। বৃষ্টি এবং মাঠ ভেজা থাকায় টানা দ্বিতীয় দিনের মতো দুই মাঠের খেলা পরিত্যক্ত হয়েছে। বগুড়া শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামের ঢাকা বিভাগের মুখোমুখি হয়েছে রংপুর বিভাগ। বৃষ্টিতে মাঠে জমে আছে পানি। মাঠের বিভিন্ন জায়গা হয়ে আছে কাদা। অন্যদিকে কক্সবাজারে ঢাকা মেট্রোর প্রতিপক্ষ সিলেট বিভাগ। এখানেও বৃষ্টির কারণে আউটফিল্ড কোনোভাবেই শুকাতে পারেনি মাঠকর্মীরা। ফলে দুপুর ২টায় দিনের খেলা পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়।