খেলা ডেস্কঃ
স্থপতি মোবাশ্বের হোসেনের আইনি নোটিশ ও বিসিবির সাবেক সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরীর চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে বিসিবি কী ভাবছে, সেটি জানা যায়নি গত কদিনে। আজ সংবাদমাধ্যমকে নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান।
বিসিবির গঠনতন্ত্র-সংক্রান্ত এক মামলায় গত ২৬ জুলাই দেওয়া আপিল বিভাগের রায় নিজেদের পক্ষে দাবি করে ২ অক্টোবর বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) ও বিশেষ সাধারণ সভার তারিখ ঘোষণা করেছে বোর্ডের বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ। এ মামলার বাদী স্থপতি মোবাশ্বের কদিন আগে সাধারণ সভা ও বিশেষ সভাসহ বোর্ডের সব কার্যক্রম বন্ধের জন্য বিসিবিকে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন। অন্যদিকে আদালতের রায়ের প্রতি সম্মান দেখিয়ে ২০১২ সালে সংশোধিত বিসিবির গঠনতন্ত্র এবং সে অনুযায়ী করা কাউন্সিলর তালিকাকে অবৈধ উল্লেখ করে এজিএম না করতে বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসানকে চিঠি দিয়েছেন সাবের হোসেন চৌধুরী।
তবে নাজমুল আজ জানিয়েছেন, এ দুটি ঘটনায় তিনি মোটেও বিচলিত নন, ‘এই গঠনতন্ত্রটা (২০১২ সালে সংশোধিত) অবৈধ, এটা কোথায় বলা হয়েছে? কোনো রায়ে তো উল্লেখ নেই। ক্রিকেটে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এটার দায়িত্ব এখনো আমাদের হাতে। যত দিন থাকবে, তত দিন অগ্রযাত্রা ধরে রাখার চেষ্টা করব। যদি কেউ প্রতিবন্ধকতা তৈরির চেষ্টা করে, তাতে আমরা বিচলিত নই। আমরা কোনো বেআইনি কিছু করব না এটা নিশ্চিত।’
সাবের হোসেন চিঠিতে যে এজিএম না করতে আহ্বান জানিয়েছেন, তাতে কান দিচ্ছে না বোর্ডের বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ। এই এজিএম না করলে বাংলাদেশের ক্রিকেটে কী কী ক্ষতি হতে পারে, সেটি তুলে ধরলেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল, ‘এজিএম যথাসময়ে হবে। এ নিয়ে আদালত থেকেও কিছু বলা হয়নি। একজন চিঠি দেবেন, একজন উকিল নোটিশ পাঠাবেন, আর তাতেই আমরা বন্ধ করে দেব? বন্ধ করলে এর প্রভাবটা কি হবে সেটা দেখেছেন? ১০ তারিখে আইসিসির বোর্ড মিটিং। আমরা ৮ মিলিয়ন থেকে যে ১৬ মিলিয়ন ডলার পাব, সেই সিদ্ধান্ত হবে এই মিটিংয়ে। ওখানে (এজিএম না হলে) আমাদের ঢুকতেই দেবে না। যদি বলেন অ্যাডহক কমিটি করবে, আইসিসি সেটাও অনুমোদন করবে না। ক্রিকেটের অগ্রযাত্রা তারা বন্ধ করতে চায়।’
কেন আইসিসি নিষেধাজ্ঞা দেবে বাংলাদেশকে, সেটির ব্যাখ্যাও দিলেন বিসিবি সভাপতি, ‘ওনারা যে ২০০৮ সালের গঠনতন্ত্রের কথা বলছেন, সেটা অনুমোদিত নয়। এটা সরাসরি আইসিসির নিয়ম ভঙ্গ করে। ২০০৮-এর গণতন্ত্রে ফিরে যাওয়া মানে আইসিসিতে বাংলাদেশের দুয়ার বন্ধ হয়ে যাওয়া। তারা বহিষ্কার বা স্থগিতাদেশ দিতে পারে আমাদের। আমাদের তখন খেলা ও আর্থিক সব সুবিধা বন্ধ হয়ে যাবে।’
সাবের হোসেন যে ২০১২ সালে সংশোধিত বিসিবির গঠনতন্ত্র এবং সে অনুযায়ী করা কাউন্সিলর তালিকাকে অবৈধ বলেছেন, সেটি নিয়ে নাজমুলের উল্টো প্রশ্ন, ‘সুপ্রিম কোর্ট থেকে সরাসরি নির্দেশ দিয়েছেন, ২০১২ সালের সংশোধিত গঠনতন্ত্র অনুযায়ী নির্বাচন হবে। আমরা ওটার মাধ্যমেই নির্বাচন করেছি। ওই গঠনতন্ত্রেই কাউন্সিলর হয়েছেন সাবের হোসেন চৌধুরী। তিনি যদি গঠনতন্ত্রই না মানেন, বেআইনি বলেন, তাহলে কাউন্সিলর হলেন কীভাবে? সুপ্রিম কোর্ট মামলাটির যখন শেষ নিষ্পত্তি করলেন, বলে দিয়েছেন, আমরা পুরোপুরি বৈধ। আইসিসি থেকেও গ্রহণযোগ্য ও অনুমোদিত। আমরা এজিএম ডেকে গঠনতন্ত্রে যদি কোনো পরিবর্তন আনা দরকার হয়, আইসিসির নিয়ম মেনে সেটা করে অনুমোদনের জন্য এনএসসির (জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ) কাছে পাঠাব।