নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
সম্প্রতি চালের বাজারে অস্থিরতার মধ্যে চার জেলায় অভিযান চালিয়ে অতিরিক্ত মজুদসহ বিভিন্ন কারণে কয়েকজন ব্যবসায়ীকে জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
ফরিদপুর, নাটোর, গাজীপুর ও রাজশাহীতে এই অভিযান চালানো হয়। এর মধ্যে শুধু নাটোরেই চার চালকল মালিককে হরেক রকম অপরাধে ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা জরিমানা করে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
নাটোরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. রাজ্জাকুল ইসলাম বলেন, গুরুদাসপুরের চাঁচকৈড় বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারে দোষী সাব্যস্ত হন সততা এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. রায়হানউদ্দিন, চৌধুরী ট্রেডার্সের মালিক কিশোর কুমার চৌধুরী, জাহাঙ্গীর অটো রাইস এজেন্সির মালিক মো. জাহাঙ্গীর আলম ও ভাই ভাই এন্টারপ্রাইজের মালিক হাজী আলমগীর কবির।
“তারা অতিরিক্ত মজুদ করে অতিমুনাফায় বিক্রি, মোটা চাল চিকন করে মিনিকেট নামে বাজারজাত, প্রতি বস্তায় ৪০০ থেকে ৫০০ গ্রাম কম দেওয়া, অবৈধ ট্রেড মার্ক ব্যবহার, বস্তায় উৎপাদনের তারিখ ও বিক্রয়মূল্য না লেখা, ১৫ দিন পরপর খাদ্য বিভাগের কাছে প্রতিবেদন দাখিল না করা, মোবাইল ফোনে সিন্ডিকেট করে দাম বাড়িয়ে অপরাধ করেছেন।”
ভ্রাম্যমাণ আদালত রায়হানউদ্দিনকে ৭০ হাজার, কিশোর কুমারকে ৫০ হাজার, জাহাঙ্গীর আলমকে ৫০ হাজার ও আলমগীর কবিরকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করে বলে তিনি জানান।
সোমবার ভ্রাম্যমাণ আদালতের এই বিচারের সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোর্তজা খান, র্যাব ৫-এর এএসপি (সিপিসি-২) শেখ মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. মনিরুল ইসলাম, জেলা বাজার কর্মকর্তা মো. নূর মোমেন, কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ নাটোরের সাধারণ সম্পাদক মো. রইসউদ্দিন।
এএসপি আনোয়ার বলেন, কোনো অসাধু ব্যবসায়ী চালের বাজার নিয়ে চালবাজি করার চেষ্টা করলে খুঁজে বের করা হবে।
ফরিদপুরের একটি বাজারে অভিযান চালিয়ে আরেক চাল বিক্রেতার গুদামে অতিরিক্ত মজুদ পেয়েছে প্রশাসন।
জেলার সদরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রোকসানা রহমান বলেন, সাড়ে সাতরশি বাজারে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার এক অভিযান চালানো হয়।
“ওই বাজারের চাল বিক্রেতা তোফাজ্জেল হোসেন খানের (৫০) গুদামে অতিরিক্ত চাল থাকায় এবং লাইসেন্স না থাকায় ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে ভ্রাম্যমাণ আদালত।”
রাজশাহীতে দুই চালকলমালিকে অবৈধভাবে পাঁচ হাজার বস্তা চাল মজুদ করায় মোট ৮০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে একটি ভ্রাম্যমাণ আদালত।
রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সুব্রত পাল বলেন, সোমবার নগরের বোয়ালিয়া থানার সপুরা এলাকায় হা-মীম ও আসলাম রাইস মিলে অভিযান চালানো হয়। হা-মীম অ্যাগ্রো ফুড রাইস মিলে চার হাজার ২৯ বস্তা ও আসলাম রাইস মিলে এক হাজার ২৮৫ বস্তা চালের অবৈধ মজুদ পাওয়া গেছে।
“এ ঘটনায় হা-মীমকে ৫০ হাজার ও আসলামকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।”
গাজীপুরের এক চাল বিক্রেতাকে দণ্ড দেওয়া হয় অতিরিক্ত দামে বিক্রির অপরাধে।
জেলার কাপাসিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাকছুদুল ইসলাম বলেন, সোমবার বিকালে কাপাসিয়া বাজারের অভিযানে গিয়ে চান মিয়া নামে এক দোকানিকে নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে চাল বিক্রি করতে দেখা যায়।
“ভ্রাম্যমাণ আদালত তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করে। এছাড়া কাপাসিয়া বাজার ও আশপাশের চাল বিক্রেতা, মজুতদার ও কলমালিকদের সতর্ক করা হয়।”