সোমবার , ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭ | ৭ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. Featured
  2. অন্যান্য খেলার সংবাদ
  3. অন্যান্য ধর্ম
  4. অপরাদ
  5. অর্থনীতি
  6. অলটাইম নিউজ লেটার
  7. আইটি টেক
  8. আইন – আদালত
  9. আইন শৃংখলা বাহিনী
  10. আন্তর্জাতিক
  11. আবহাওয়া বার্তা
  12. ইসলাম
  13. উদ্যোগ এবং পরিবর্তন
  14. ওয়েবসাইট
  15. কবিতা

“নার্সিং” পেশা হিসাবে আরও উন্নত ও মানসম্পন্ন হওয়া প্রয়োজন

প্রতিবেদক
alltimebdnews24 com
সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৭ ৯:২১ অপরাহ্ণ

কলামিস্টঃ আর. এম। ।

রোগীর চিকিৎসার সঙ্গে ডাক্তার ও নার্সের সম্পর্ক ওতপ্রোত। নার্সিংটা ঠিকমত না হইলে যে কোনো রোগের নিরাময় বিলম্বিত হওয়া বিচিত্র নহে। নার্স ছাড়া হাসপাতাল চলিতে পারে না। এই পেশার অগ্রদূত ফ্লোরেন্স নাইটেঙ্গেল নার্সিং-কে তুলনা করিয়াছেন ফাইন আর্টের সঙ্গে। এখানেই অবশ্য তিনি থামিয়া যান নাই। আরও একধাপ অগ্রসর হইয়া তিনি বলিয়াছিলেন, ফাইন আর্ট কী, নার্সিং হইল ফাইনেস্ট অফ ফাইন আর্ট। আর এই আর্ট রপ্ত করিবার জন্য প্রয়োজন ধ্যানমগ্ন সেবাব্রত। অস্ত্রোপচারের রোগীর জন্য শল্য চিকিৎসক যেমন গুরুত্বপূর্ণ, সেবাও গুরুত্বপূর্ণ ততটাই। কিন্তু আমাদের দেশে এই পেশাটি তাহার গুরুত্ব ও সৌন্দর্য দুই-ই হারাইতে বসিয়াছে বলিয়াই প্রতীয়মান হয়। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ক্রমোত্কর্ষের সাথে সাথে নার্সিং পেশাটিরও উত্কৃষ্টতার দাবি মোটেও অপ্রাসঙ্গিক নহে। এই পেশায় নিয়োজিত কর্মীদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। সেই প্রয়োজনীয়তার নিরিখেই দেশে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে প্রতিষ্ঠিত হইয়াছে শতাধিক নার্সিং কলেজ ও ইনস্টিটিউট। কিন্তু এইসব প্রতিষ্ঠানের বেশিরভাগ চলিতেছে খুঁড়াইয়া খুঁড়াইয়া। শিক্ষার্থী থাকিলেও শিক্ষক ও প্রশিক্ষকের অভাব তীব্র। ফলে সরকারি বা বেসরকারি কলেজ ও ইনস্টিটিউট হইতে যাহারা পাস করিয়া বাহির হইতেছেন তাহাদের দক্ষতা নিয়া প্রশ্ন রহিয়াছে। আবার প্রয়োজনের তুলনায় প্রশিক্ষিত নার্সের সংখ্যাও অপ্রতুল।

প্রত্যেক চিকিত্সকের বিপরীতে নার্স দরকার কমপক্ষে ৩ জন। ইহা পুঁথিগত কথা। বাস্তব অভিজ্ঞতা হইতে আমরা জানি যে, বড় বড় সরকারি হাসপাতাল সমূহে, সেবার মান যেমন তেমন, নার্সের সাক্ষাত্ পাওয়া যায় কমবেশি। পক্ষান্তরে দুই-একটি ব্যতিক্রম ছাড়া বেসরকারি ক্লিনিক ও হাসপাতালে সাদা ভেইল এবং অ্যাপ্রন পরা যাহাদের দেখিতে পাওয়া যায়, তাহারা আদৌ পেশাদার নার্স কিনা, সেই প্রশিক্ষণ তাহাদের আছে কিনা, তাহা সন্দেহাতীত নহে। কাজেই ফ্লোরেন্স নাইটেঙ্গেলের নান্দনিক সেবা পাওয়ার আশা এইখানে দূরাশার নামান্তর।

চিকিত্সা ব্যবস্থাকে আরও আধুনিক ও ফলপ্রসূ করিয়া তুলিতে হইলে নার্সিং-এর মানোন্নয়ন আবশ্যক। এই জন্যে সর্বাগ্রে প্রয়োজন পেশাগত প্রশিক্ষণ ও শিক্ষা। এই প্রয়োজনীয়তার কথা বিবেচনায় রাখিয়া ২০০৯ সালে বেসরকারি পর্যায়েও নার্সিং কলেজ ও ইনস্টিটিউট স্থাপনের নীতিমালা গৃহীত হয়। সরকারি প্রতিষ্ঠান তো ছিলই। কিন্তু এইসব কলেজ ও ইনস্টিটিউটে নিয়মিত শিক্ষক ও প্রশিক্ষকই যদি না থাকেন, তাহা হইলে শিক্ষার্থী কী শিখিবেন, পেশার মানোন্নয়ন হইবে কেমন করিয়া? আমরা যতদূর জানি, একজন দক্ষ নার্সের জন্য অ্যানাটমি, ফিজিওলজি, মাইক্রোবায়োলজি, ফার্মাকোলজি ও প্যানোফিজিওলজির মত বিষয়ে প্রাথমিক লেখাপড়া থাকাটা জরুরি। নার্সিং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহে এইসব মৌলিক বিষয়ে পড়ানোও হইয়া থাকে। পাঠ্যসূচিতে অন্তত বিষয়গুলি অন্তর্ভুক্ত রহিয়াছে। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে শিক্ষক নাই, ক্লাস হয় না। এই যদি অবস্থা হয়, তবে পাঠ্যসূচিতে থাকা না থাকার পার্থক্য কোথায়?

দেশের হাসপাতালগুলিতে যেমন আরও অনেক দক্ষ নার্সের প্রয়োজন রহিয়াছে, তেমনই বিদেশেও দক্ষ নার্সের চাহিদা রহিয়াছে। তাহার মানে, পেশা হিসাবে নার্সিং যেমন খুবই দরকারি, তেমনই জনশক্তি হিসাবেও ইহা অত্যন্ত সম্ভাবনাময়। পেশা হিসাবে নার্সিং উন্নত ও মানসম্পন্ন হইলে সার্বিকভাবে চিকিৎসা সেবার মানোন্নয়ন যে হইবে, তাহাতে কোনো সন্দেহ নাই। দেশের প্রয়োজন মিটাইয়া আমাদের প্রশিক্ষিত নার্সদের অনেকের বিদেশে কর্মসংস্থান করিয়া নেওয়াও অসম্ভব নহে। কাজেই সরকারি ও বেসরকারি উভয় পর্যায়ে নার্সিং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহের সমস্যা-সীমাবদ্ধতার অবসান হওয়া দরকার। বিষয়টির প্রতি সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষের আশু দৃষ্টি কামনা করি।

(Visited ১৫ times, ১ visits today)

সর্বশেষ - অর্থনীতি

আপনার জন্য নির্বাচিত