পথে পথে নানা দুর্ভোগ পার করেও ঈদ উৎসব পালন করতে নাড়ির টানে বাড়ি ফিরতে শুরু করছেন বরিশালের কর্মজীবী মানুষ। গতকাল মঙ্গলবার ভোর রাতে লঞ্চে করে হাজার হাজার মানুষ রাজধানী ঢাকা থেকে বরিশালে এসেছেন। অনেকে বাসে ও বিমানে করেও বরিশালে ফিরছেন। তবে যুগের পর যুগ বরিশাল-ঢাকা নৌ-রুটে লঞ্চে করেই বাড়ি ফিরতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন অনেকে। স্পেশাল সার্ভিসের শুরুতেই স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে এ নৌ-রুটে যাত্রীর সংখ্যা বেড়ে গেছে কয়েকগুণ। ফলে মঙ্গলবার ভোর সোয়া ৩টা থেকেই দণিাঞ্চলের অন্যতম বৃহত্তর বরিশাল নদী বন্দরে স্বল্প সময়ের জন্য ঘরমুখো মানুষের জনস্রোত চোখে পড়ে। সুরভী, সুন্দরবন, পারাবত, তাসরীফ, কালামখান, অ্যাডভেঞ্চারসহ বেশ কয়েকটি লঞ্চ ঢাকা থেকে যাত্রী নিয়ে সরাসরি বরিশাল নদীবন্দরে নোঙর করে। পাশাপাশি ভায়া রুটের ৩টি লঞ্চ ও বিআইডব্লিউটিসি’র ১ টি স্টিমারও একটি যাত্রীবাহী জাহাজ এ বন্দরে ঘাট দেয়। লঞ্চ থেকে নেমে আসা আব্দুল আলিম জোমাদ্দার নামে এক যাত্রী জানান, ঢাকার বাসা থেকে নামার পর থেকেই নানা দুর্ভোগ ও যানজট শেষে সদরঘাট পৌঁছেন তিনি ও তার পরিবার। পরে লঞ্চের কেবিন না পেয়ে ডেকে জায়গা করতে হয়েছে তাদের। এ জন্য লঞ্চ স্টাফকে দিতে হয়েছে ৩শ টাকা। তিনিই ডেকে জায়গার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। নৌ-যান স্টাফরা জানান, লঞ্চের বিশেষ সার্ভিস শুরুতেই মানুষের চাপ উপলব্ধি করা গেছে। দিনে দিনে এ যাত্রী চাপ আরো বাড়বে। বিআইডব্লিউটিএ বরিশাল নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের উপ পরিচালক আজমল হুদা মিঠু সরকার জানান, গতকাল মঙ্গলবার ভোর রাতে ঢাকা থেকে ৭টি লঞ্চ যাত্রী নিয়ে অসেছে। বুধবার এ লঞ্চে সংখ্যা আরো বাড়বে। যাত্রীদের নিরাপত্তা ও হয়রানি রোধে গতকালও তারা সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রতিনিধিদের নিয়ে সভা করেছেন। সভার সিদ্ধান্তের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী বহন করতে দেয়া হবে না। লঞ্চ ছাড়ার আগে মাস্টার ড্রাইভারদের সার্টিফিকেট যাচাই বাছাই করা হবে। বরিশাল নৌ-বন্দর থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই শফিকুল ইসলাম জানান, রাত ২টা থেকেই বন্দর এলাকাসহ আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। যাতে ঘরমুখো মানুষ লঞ্চ থেকে নেমে নিরাপদে বাড়ি যেতে পারেন। জানা যায়, নৌ থানা ও কোতোয়ালী মডেল থানা পুলিশ নদীবন্দর ও আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিতে দায়িত্ব পালন করছেন। পাশাপাশি ফায়ার সার্ভিস যাত্রীদের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে নিয়োজিত রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় নৌ স্টেশনের স্টেশন অফিসার মো. হানিফ।