ধারাভাষ্য কক্ষে হঠাৎ সবার চোখ আটকে গেল। দেখা গেল পরিচিত একটা হাসিমুখ। নিয়মিত ধারাভাষ্যকরদের সাথে বসে ম্যাচের ধারা বিবরণী দিচ্ছেন। টিভিতে দেখে দর্শকদের কেউ কেউ মন্তব্য করছিলেন, আহারে! ছেলেটার ভাগ্য খারাপ। না হয়, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এই টেস্টেও খেলার কথা ছিল তার। বলছিলাম জাতীয় দলের এক সময়ের অন্যতম সফল ওপেনার এবং অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশের হয়ে একমাত্র সেঞ্চুরিয়ান শাহরিয়ার নাফীসের কথা।
২০০৬ সালে অস্ট্রেলিয়া যখন সর্বশেষ বাংলাদেশে খেলতে আসে, সেবার ফতুল্লায় শাহরিয়ার নাফীস পন্টিংয়ের দলের বিপক্ষে ১৩৮ রানের একটা অনাবদ্য ইনিংস উপহার দেন। সেটিই এখন পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে কোন বাংলাদেশির প্রথম সেঞ্চুরি। সেই শাহরিয়ার নাফিসকেই আজ দেখা গেল বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে। তবে অন্য পরিচয়ে। ছিলেন আজ ধারাভাষ্যকার হিসেবে।
কোনো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আজই প্রথম ধারাভাষ্য দিলেন এই বাঁ-হাতি বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান। এর আগে কখনও কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচে ধারাভাষ্য দেয়ার সুযোগ হয়নি তার। তবে ইমার্জিং এশিয়া কাপের ফাইনালে একবার ধারাভাষ্য দেয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন নাফীস।
আন্তর্জাতিক ম্যাচে ধারাভাষ্যের অভিজ্ঞতা নিয়ে শাহরীয়ার নাফীসের সাথে একান্তে কথা হয়। তিনি জানান, বেশ উপভোগ করছেন ধারাভাষ্য দেয়ার কাজটা।
প্রথমবারেরমত আন্তর্জাতিক ম্যাচে ধারাভাষ্য দেয়ার অভিজ্ঞতা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘কাজটা এখনও শিখছি। তবে বেশ ভাল লাগছে। হাতে যেহেতু এখন কোন কাজ নেই। তাই কিভাবে ধারাভাষ্য দিতে হয় তা শিখে রাখছি। ভবিষ্যতে কাজে লাগতে পারে।’
এখন থেকে নিয়মিত ধারাভাষ্য বক্সে দেখা যাবে কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে দৃড় চিত্তে এই ব্যাটসম্যান বলেন, ‘আমি আরও খেলে যেতে চাই। ধারাভাষ্যে এখনই আসার কথা ভাবছি না।’
ধারাভাষ্য দেয়াটা কেমন লাগছে? এই প্রশ্নের জবাবে নাফীস বলেন, ‘কাজটা বেশ কঠিন। কানে হেডফোন থাকে, পেছন থেকে অনেকেই কথা বলে। এটা একটু কঠিনই। তবে আশা করছি শিখে নেবো। ফ্রি সময়টা কাজে লাগাচ্ছি আর কি।’
তবে তার মূল লক্ষ্য আরও ৫ থেকে ১০ বছর খেলা চালিয়ে যাওয়া। এ প্রসঙ্গে নাফীস বলেন, ‘আমার ইচ্ছা আরও ৫ থেকে ১০ বছর খেলাটা চালিয়ে যাওয়া। মূলতঃ সেজন্যই নিজেকে প্রস্তুত রাখছি।’