ঈদের ছুটি তিনদিন থেকে বাড়িয়ে ছয়দিন হওয়ার বিষয়টি গত ঈদুল ফিতর থেকেই আলোচিত হচ্ছে। তখন ছুটি না বাড়লেও ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে এ বিষয়ে ফের উদ্যোগ নিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। সব স্তরের সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মনে ঘুরপাক খাচ্ছে একটা প্রশ্ন- ঈদের ছুটি কি এবার বাড়ছে?
ঈদের ছুটির বিষয়ে জানতে চাইলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিধি অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. আব্দুল হাকিম জাগো নিউজকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের গভর্ন্যান্স ইনোভেশন ইউনিট বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে ঈদের ছুটি ছয়দিন করার সুপারিশ করেছিল। তারা দুই ঈদের ছুটি তিনদিন করে ছয়দিন বাড়িয়ে নৈমিত্তিক ছুটি ২০ দিনের পরিবর্তে ১৪ দিন করতে বলেছিল। কিন্তু বিষয়টি ‘পলিসি ম্যাটার’ হওয়ায় এ বিষয়ে মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত লাগবে। কিন্তু তার আগে বিষয়টি মন্ত্রিসভায় উপস্থাপন করা হবে কি না সে বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন নেয়া প্রয়োজন। আমরা একটি প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠিয়েছি। কিন্তু সেটি এখনও ফেরত আসেনি।’
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন পেলে ঈদের ছুটি ছয়দিন করার প্রস্তাব মন্ত্রিসভা বৈঠকে পাঠানোর উদ্যোগ নেয়া হবে।’
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, গত রোজার ঈদের ছুটি ছয়দিন করার একটি প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু এটি প্রধানমন্ত্রীর কাছে উপস্থাপনের আগেই সেখানকার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা প্রস্তাবটি আরও যুক্তিযুক্ত করে উপস্থাপন করতে বলে ফেরত পাঠান।
ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, দেশে এখন বন্যা পরিস্থিতি বিরাজ করছে- এই মুহূর্তে প্রধানমন্ত্রী এ ধরনের একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেবেন কি না সন্দেহ আছে।
সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার দিন সাধারণ ছুটি। এছাড়া এই দুই ঈদের আগের ও পরের দিন নির্বাহী আদেশে ছুটি থাকে। বর্তমানে এই দুই ঈদে তিনদিন করে ছুটি থাকে।
এবার জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা সাপেক্ষে বাংলাদেশে আগামী ২ সেপ্টেম্বর মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা বা কোরবানির ঈদ উদযাপিত হতে পারে। সে অনুযায়ী এবার ঈদের ছুটি এক সেপ্টেম্বর শুরু হয়ে শেষ হবে ৩ সেপ্টেম্বর। ছুটি যদি আরও তিনদিন বাড়ানো হয় তবে ৬ সেপ্টেম্বর ছুটি শেষ হবে।
তবে একই সঙ্গে নৈমিত্তিক ছুটি কমিয়ে সমন্বয় করা হলে মোট ছুটিতে কোনো প্রভাব পড়বে না।
গভর্ন্যান্স ইনোভেশন ইউনিট ছুটি বাড়ানোর সুপারিশে বলেছিল, প্রধান ধর্মীয় উৎসবের ছুটি বাড়িয়ে জনদুর্ভোগ লাঘব হতে পারে। ছুটি ছয়দিন হলে যানবাহনের ওপর চাপ, যানজট ও দুর্ঘটনা কমবে। ছুটি থেকে চাকরিজীবীদের কর্মস্থলে সানন্দে ফেরার প্রবণতা বাড়বে। অফিস খোলার দিন থেকে পুরোদমে অফিস চালু হবে। এতে অফিসের লিফট, গাড়িসহ ইউটিলিটি সার্ভিসের সদ্ব্যবহার নিশ্চিত হবে।