নিজস্ব প্রতিবেদক।।
গতকাল দিনভর আলোচনায় ছিল প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বৈঠক প্রসঙ্গ। রাজনৈতিকসহ সর্বমহলের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল কী কথা হলো প্রধান বিচারপতির সঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের? নৈশভোজে কী খেলেন ওবায়দুল কাদের? তাদের আলোচনা কি শুধুই সৌজন্য সাক্ষাৎ? নাকি সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর রায়ের পর্যবেক্ষণ নিয়ে তাদের মধ্যে আলাপচারিতা হয়েছে।
ইতিমধ্যে গতকাল বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন, আমরা শঙ্কিত হয়ে গেছি পত্রিকার খবর দেখে। সরকার রায় নিয়ে প্রধান বিচারপতির ওপর ‘চাপ সৃষ্টির চেষ্টা করছে’। আর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, ‘প্রধান বিচারপতির সঙ্গে আলোচনা হয়েছে, আলোচনায় সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ে যে অবজারভেশন ছিল তা নিয়ে পার্টির বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে। আলোচনা আরও হবে, আলোচনা শেষ হওয়ার আগে কোনো মন্তব্য করতে চাই না। ’ গত শনিবার রাত ৮টার দিকে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে তার বাসভবনে নৈশভোজে অংশ নেন ওবায়দুল কাদের। নৈশভোজ ছাড়াও তাদের মধ্যে প্রায় দুই ঘণ্টা একান্তে বৈঠক হয়।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ঘনিষ্ঠ কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ওই সাক্ষাতে ওবায়দুল কাদের প্রধান বিচারপতিকে জানিয়েছেন, এ রায় নিয়ে রাজনৈতিক মহলে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে, যা অনভিপ্রেত। রায়কে কেন্দ্র করে অনাকাঙ্ক্ষিত কোনো পরিস্থিতি তৈরি হোক বা বিচার বিভাগের সঙ্গে নির্বাহী বিভাগের মুখোমুখি অবস্থান সরকার চায় না। তাই রায়ে থাকা অপ্রাসঙ্গিক পর্যবেক্ষণ বাদ দিয়ে রাজনৈতিক মহলে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনতে বিচার বিভাগের দায়িত্ব আছে। প্রধান বিচারপতিকে এ দায়িত্ব নিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি নিরসন করতে অনুরোধ জানান ওবায়দুল কাদের। তবে প্রধান বিচারপতি তাত্ক্ষণিকভাবে তার কোনো অবস্থান ওবায়দুল কাদেরকে জানাননি।
জানা গেছে, সাক্ষাতের অগ্রগতি সকালে গণভবনে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অবহিত করেছেন ওবায়দুল কাদের। গতকাল সকালে এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে ওবায়দুল কাদের বলেন, একেক পত্রিকা একেক রকম খবর লিখেছে। কেউ লিখেছে, প্রধান বিচারপতির সঙ্গে বৈঠক শেষে গণভবনে গিয়েছি। আবার কেউ লিখেছে, প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সাক্ষাতের আগে গণভবনে গিয়েছিলাম। আসলে আজ (গতকাল) দলীয় সভানেত্রীর সঙ্গে দেখা করলাম। কী কথা হয়েছে? এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি। বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর দুজন নেতা জানান, প্রধান বিচারপতির সঙ্গে আলোচনা আরও চলবে। আমরা মনে করি, আলোচনার মধ্য দিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি নিরসন হবে।