রির্পোটঃঅনলাইন ডেস্ক.
ফিলিপাইনসের ম্যানিলার ডি লা সালি ইউনিভার্সিটি থেকে গ্র্যাজুয়েশন করেন আইলেন অ্যাডালিড। মাত্র ১৯ বছর বয়সে কর্পোরেট দুনিয়ায় প্রবেশ করেন। তার পড়াশোনার বিষয় ছিল বিজনেস
ম্যানেজমেন্ট। কিন্তু শিগগিরই তিনি ডিজিটাল নোমাডে পরিণত হলেন। ফিলিপাইনসের এই সাধারণ নারী একটি ব্যাংকে চাকরি করে মাসে মাত্র ৩০০ ডলার কামাতেন। তখন তার বয়স ২১। এই চাকরি ছেড়ে এমন ক্যারিয়ার গঠনের চেষ্টা করলেন যাতে শুধু ঘোরাঘুরি করতে করা যাবে। পরের বছরের মধ্যে তিনি ফ্রিল্যান্সার গ্রাফিক ডিজাইন, ওয়েব ডিজাইন, এসইও ম্যানেজমেন্ট
এবং অনলাইন মার্কেটিংয়ে কাজ শুরু
করলেন। ২০১৪ সালে আমাজন রিটেইল বিজনেস শুরু করেন, নাম দেন অ্যাডালেইড গিয়ার। এটি হেলথ ও আউটডোর অ্যাকসেরসরিজ কম্পানি হিসাবে প্রতিষ্ঠা পায়। এখন অ্যাডালেইড মাসে ৫ হাজার ডলার আয় করেন। এশিয়া ও ইউরোপের অনেক দেশ এখন তার গন্তব্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখন তিনি মাসে ৭০ হাজার ডলারের বিজনেস ভেঞ্চার পরিচালনা করেন। দেখুন তার কার্যক্রম সম্পর্কে কিছু তথ্য। ১. কলেজে থাকতে অ্যাডালেইড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন। এ ছাড়া নেসলে, ইউনিলিভার এবং সিমেন্সের অধীনে কাজ করার বিষয়ে কিছু অভিজ্ঞতাও অর্জন করেছেন। ২. গ্র্যাজুয়েশনের পর ব্যাংকে কাজ করেছেন দুই বছর। ২০১৩ সালে ৬০০ ডলার সঞ্চয় নিয়ে তিনি চাকরি ছেড়ে দেন। ৩. গ্রাফিক ডিজাইনার, ওয়েব ডেভেলপার এবং মার্কেটিং অ্যাসিস্টেন্ট হিসাবে কাজ শুরু করেন। ৪. ফ্রিল্যান্সার হিসাবে এক বছর কাজ করার পর আমাজনের রিটেইল বিজনেস শুরু করেন। অ্যাডালেইড গিয়ার নামের প্রতিষ্ঠান চালু করেন। বেলজিয়ামে একটি শাখা খোলেন। সেখানে পড়তে যান ইউনিভার্সিটি অব অ্যান্টওয়ার্পে। ৫. কয়েক মাস পর অ্যাডালেইড স্কুল ছেড়ে দেন। এক বেলজিয়ান তার পার্টনার হয়ে যান। তারা দুজন মিলে ব্যবসা এগিয়ে নিতে থাকেন। ৬. দুজনের শ্রম বৃথা যায়নি। অ্যাডালেইড গিয়ার স্পোর্টস এবং আউটডোর গিয়ার বিক্রি শুরু করে। এখন মাসে ৭০ হাজার ডলারের বিক্রি তাদের। আমেরিকা এবং ব্রিটেনে বাজার রয়েছে। ৭. এ ব্যবসায় পরামর্শদাতাদের প্রাধান্য দেওয়াটাকে তারা কৌশল হিসাবে বেছে নেন। এর মাধ্যমে তারা ব্যবসাকে অনেক এগিয়ে নিয়েছেন। ৮. এই ব্যবসা থেকে এখন একাই ৫ হাজার ডলার কামাই করেন অ্যাডালেইড। পার্টনারশিপ, স্পন্সড পোস্ট এবং সোশাল মিডিয়াকে কাজে লাগান। ট্রাভেল ব্লগেও সক্রিয় তিনি। মাঝে মাঝে বিনামূল্যে ভ্রমণ ও থাকার জন্য স্কোর তুলে ফেলেন। ৯. বিভিন্ন স্থান থেকে প্রাপ্ত সব প্রস্তাব আবার গ্রহণ করেন না তিনি। অনলাইন থেকেই তার আয়ের বেশি অংশটা আসে। বিভিন্ন ট্রাভেল এজেন্সির ডিসকাউন্ট তার আয়ের ৭০ শতাংশ বাঁচিয়ে দেয়। ১০. অ্যাডালেইড গিয়ারে দিনে ৪ ঘণ্টার বেশি কাজ করেন না তিনি। মূলত মার্কেটিং, প্রমোশন এবং কমিউনিকেশ নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। এ নিয়ে বিভিন্ন স্থানে দৌড়াতে হয় তাকে। ১১. বেলজিয়ামে দুই বছর থাকার সময় অনেক কিছু করেছেন। নরওয়েতে পাহাড়ে উঠেছেন, প্যারিসে দারুণ সময় কাটিয়েছেন, বেলজিয়ামের ফারো আইল্যান্ডস-এ ঘুরেছেন। অস্ট্রিয়াতে আল্পস ইস্ট অব দ্য ব্রেনার পাস-এ গিয়েছেন। জাপানে গিয়ে গেইসাদের সঙ্গে মিশেছেন। ১২. এই ঘোরাঘুরির জীবন তাকে উৎপাদনশীলতার বিষয়ে বেশ কিছু শিক্ষা দিয়েছে। চলার মধ্য থাকলে যেকোনো মানুষের মনোযোগ, ছন্দ এবং শক্তি নষ্ট হয় না। ১৩. অন্যদের জন্য তার পরামর্শ হলো, সব সময় দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করুন। কিছুটা দক্ষতা অর্জন করে ছোট পরিসরে কাজ শুরু করে দেওয়া যায়। ১৪. এখন অ্যাডালেইড ফিলিপাইনসে
ফিরে এসেছেন। পরের বাড়ি বানাতে চান স্পেনকে। দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার মাধ্যমে বাড়াতে চান ব্যবসার পরিসর।
সূত্র : বিজনেস ইনসাইডার