মোঃ ফেরদাউছ সিকদারঃ চলছে শ্রাবন মাস। আসছে ভাদ্র। এখনি মাঝে মাঝে নামছে পিরি পিরি বৃষ্টি। ভাদ্র মাসের পুরো মাসেই চলবে বৃষ্টি বন্যা। চারদিকে পানিতে থৈ থৈ করবে। মাঠ, ঘাট, চক তলিয়ে যাবে বৃষ্টির পানিতে। পিরোজপুর জেলার নেছারাবাদ স্বরুপকাঠী উপজেলার আটঘর কুরিয়ানা এলাকার সন্ধ্যা নদীর খালের হাটে দূরদূরান্ত থেকে ক্রেতারা ছুটে আসছেন। জমজমাট হয়ে উঠেছে ভাসমান নৌকার হাটটি। প্রতি সপ্তাহের শুক্রবার নয়নাভিরাম নৌকার হাটে বিভিন্ন ধরনের নৌকা সাজিয়ে বসছেন বিক্রেতারা। মেহগনি, কড়াই, আম, চাম্বল ও রেইনট্রী গাছের তৈরি নৌকা মানভেদে ১৫শ’ থেকে ৭ হাজার টাকা দরে বিক্রি করা হয়।
জানা যায়, ঐ উপজেলার ০৮ ইউনিয়নের ১৬ গ্রামের প্রায় দেড় সহস্রাধিক পরিবার বংশ পরাক্রমায় নৌকার ব্যবসার সঙ্গে জড়িত আছেন। আর বর্ষা মৌসুম হলো তাদের কাজের সময় বেড়ে যায়। অন্যসময় গাছ ও কাঠের ব্যবসায় মনোনিবেশ করলেও বর্ষায় তাদের ভালো টাকা লাভ হয়। তাই এই সময়টার অপেক্ষায় থাকেন নৌকার কারিগররা। অন্যসময়ও এখানে হাট বসে, নৌকা বিক্রি হয়। তবে বর্ষার মতো এতটা হয় না। এ সময় পরিবারগুলোর ব্যস্ততা বেড়ে যায় চোখে পড়ার মতো।
নদীবেষ্টিত এই অঞ্চলে প্রাকৃতিকভাবেই অসংখ্য নদী ও খালের শাখা বয়ে গেছে গ্রামগুলোর কোল ঘেঁষে। মানুষের যাতায়াত ও ক্ষুদ্র বিক্রেতাদের অন্যতম বাহনে রূপ নেয় ভাসমান ঐ নৌকার হাট। কারণ বর্ষার অথৈ জলে খালবিল নদীনালা টইটুম্বর থাকে। নৌকায় করে চলাচলসহ ক্ষুদ্র বিক্রেতারা সবজিসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য বিক্রি করেন।
এছাড়া কৃষি কাজ পরিচর্যা, পেয়ারা বাগান থেকে পেয়ারা সংগ্রহ ও বিক্রি, বিল থেকে শাপলা তোলা, মাছ শিকার করাসহ নানান প্রয়োজনে নৌকা অপরিহার্য। যুগ যুগ ধরে নৌকা এখানকার দীর্ঘ সময়ের ঐতিহ্য বহন করে। এ যেন চিরচেনা বাংলার অপরূপ সৌন্দর্যের কথা জানান দেয়।