অনলাইন ডেস্কঃ
অবিলম্বে আইসিটি অ্যাক্টের ৫৭ ধারা প্রত্যাহার করে সাংবাদিক নির্যাতন ও হয়রানি বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ। তারা এই ধারার ব্যাপক অপপ্রয়োগে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, গণতান্ত্রিক চেতনা ও মিডিয়ার স্বাধীনতা খর্বকারী এই ধারা সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছে। এতে অর্থনৈতিক, সামাজিক উন্নয়ন ও রাজনৈতিক অধিকারও বাধাগ্রস্ত হবে। গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ঃ আইসিটি এ্যাক্টের ৫৭ ধারা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এ আহ্বান জানান। ‘সাউথ এশিয়ান ফ্রি মিডিয়া এ্যাসোসিয়েশন’ (সাফমা) এই গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে।
মিডিয়া কমিশনের চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী ড. মিজানুর রহমান শেলী বলেন, আইসিটি এ্যাক্টের ৫৭ ধারায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে সরকার। আমলাতন্ত্র হচ্ছে আলাদীনের দৈত্যের মত- চেরাগ যার হাতে থাকে, আমলাতন্ত্রও তার। ৫৭ ধারার মত কালো আইন থাকলে শুধু মিডিয়া জগত্ই নয়, সমাজের সব অংশেরই সুস্থতা ও বিকাশ বিঘ্নিত হবে। সরকারকে এটাই ভাবতে হবে যে, তারা যখন ক্ষমতায় থাকবেন না, তখন এ কালো আইন তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবহূত হবে।
নিউজ টু ডে’র সম্পাদক ও সাফমা’র সাবেক সভাপতি রিয়াজউদ্দিন আহমদ বলেন, ৫৭ ধারার মত কালো আইনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন যেহেতু সূচিত হয়েছে, অবশ্যই তা সফল হবে।
বিএফইউজে’র (একাংশ) সভাপতি ও একুশে টিভি’র সিইও মনজুরুল আহসান বুলবুল বলেন, ৫৭ ধারার পক্ষে তথ্যমন্ত্রী জাতীয় সংসদে যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা লজ্জাজনক ও অগ্রহণযোগ্য। ৫৭ ধারার অপসারণ চাই। এ পর্যন্ত এ আইনে দায়েরকৃত সব মামলা প্রেস কাউন্সিলের আওতায় নিতে হবে। দৈনিক সংবাদের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক খন্দকার মুনীরুজ্জামান বলেন, সরকার এ আইন দুর্বৃত্তদের হাতে তুলে দিয়েছে। ব্যবহূত হচ্ছে প্রতিশোধমূলক স্পৃহা কিংবা ব্যক্তিস্বার্থে।
দৈনিক যুগান্তরের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সাইফুল আলম বলেন, সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে ৫৭ ধারা প্রতিবন্ধক, একটা জুজু। যদি সংশোধনই করতে হয় তবে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে সমন্বিতভাবে সেটা করতে হবে। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বাদশা বলেন, এ পর্যন্ত ১৬ জন রিপোর্টারসহ অনেক সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ৫৭ ধারার অপপ্রয়োগ করা হয়েছে। এই কালো আইন দ্রুত বাতিল করতে হবে।
বিএফইউজে’র সাবেক মহাসচিব আবদুল জলিল ভূঁইয়া বলেন, সাংবাদিক সমাজের বিভক্তির কারণে ৫৭ ধারা নির্বিঘ্নে অপব্যবহার করা সম্ভব হচ্ছে। ৫৭ ধারা বাতিলের আন্দোলনে সংশ্লিষ্ট সবাইকে এক প্লাটফর্মে আনার উদ্যোগ নেওয়ার জন্য তিনি সাফমা নেতৃত্বের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সাফমা’র সভাপতি জাহিদুজ্জামান ফারুক। আলোচনায় আরো অংশ নেন বিএফইউজে’র (একাংশ) মহাসচিব ওমর ফারুক, নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের সভাপতি নাসিমুন আরা হক, ডিইউজে’র (একাংশ), ডিইউজে’র (একাংশ) সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, সাবেক সভাপতি আবদুস শহিদ, সাফমা’র সহ-সভাপতি রাশেদা আমিন। স্বাগত বক্তব্য প্রদান ও অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সাফমা’র মহাসচিব নূরুল হুদা।