নৌ-পরিবহন অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী একেএম ফখরুল ইসলামকে দুদিনে আগে ঘুষসহ দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) হাতে নাতে ধরলেও তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল দীর্ঘদিনের।
এজন্য নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি তাকে অপসারণের সুপারিশ করে। কিন্তু মন্ত্রণালয় ওই দুর্নীতিবাজের পক্ষ নিয়ে বলেছিল ‘সে চলে গেলে সেখানে কাজ করার মতো আর কেউ নেই।’
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির ৪৪তম বৈঠকে এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন কমিটির সভাপতি মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম ও কমিটির সদস্য এম আব্দুল লতিফ।
প্রসঙ্গত মঙ্গলবার দুপুরে মতিঝিলের নিজ কার্যালয়ে দুদক অভিযান চালিয়ে আটক করে একেএম ফখরুল ইসলামকে। এ ঘটনায় মতিঝিল থানায় দুদক মামলা করে। দুর্নীতিবাজ ওই কর্মকর্তা বর্তমানে রিমান্ডে রয়েছেন।
সংসদীয় কমিটির বৈঠকে বিষয়টি তোলেন সভাপতি নিজেই। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সংসদীয় কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী ওই ব্যক্তিকে অপসারণ করলে আজ সরকারকে বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হত না। অথচ সেই সময় মন্ত্রণালয় জানায়, তাকে বিদায় করলে কাজ করার মতো কেউ নেই। কেউ না থাকার অজুহাতে দুর্নীতিবাজকে রাখা যুক্তিযুক্ত নয়।
এ সময় এম আব্দুল লতিফ বলেন, আমরা ভেবে চিন্তে সুপারিশ করি। অথচ সেগুলো বাস্তবায়ন হয় না। ওই প্রকৌশলীকে অপসারণ করলে তাকে নিয়ে মিডিয়ায় তোলপাড় হত না। এ নিয়ে সরকারও বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়ত না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কমিটির সদস্য আনোয়ারুল আজীম (আনার) জাগো নিউজকে বলেন, বৈঠকে কমিটি সদস্য নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু তিনি এসব প্রশ্নের কোনো উত্তর দেননি।
এদিকে সংসদের গণসংযোগ অধিশাখা থেকে পাঠানো প্র্রেস বিজ্ঞপিতে বলা হয়, বৈঠকে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) এবং জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের কার্যক্রম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।
কমিটি নদীর দখল, দূষণরোধ ও দূষণযুক্ত নদীর দূষণের মাত্রা উন্নয়নের লক্ষ্যে আইনি প্রক্রিয়া বাস্তবায়নের লক্ষ্যে পৃথক আদালত প্রতিষ্ঠা এবং পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে পরিবেশ দূষণকারী কোম্পানিগুলো বন্ধের সুপারিশ করে।
বৈঠকে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নে যন্ত্রপাতি ক্রয়ে সক্ষমতা যাচাই করে ক্রয় করার জন্য মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের সুপারিশ করা হয়।
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন তালুকদার আব্দুল খালেক, মো. আব্দুল হাই, মো. নূরুল ইসলাম সুজন এবং মমতাজ বেগম।