বরিশাল অফিস॥ বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলা থেকে পুলিশের জব্দকৃত প্রায় ২ কোটি টাকার ভারতীয় শাড়ি ‘বরিশাল ফ্যাশন হাউজ’ নামে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের। বরিশাল নগরীর পুলিশ লাইন এলাকায় অবস্থিত ওই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র ও ১২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর কেএম শহীদুল্লাহ। সে দীর্ঘ দিন ধরেই ভারতীয় চোরাই শাড়ি-থ্রী পিচের ব্যবসা করে আসছে। গৌরনদীর ভোলা সাহা নামে এক ব্যবসায়ীর মাধ্যমে নৌ ও সড়ক পথে সুবিধাজনক সময়ে চোরাই পন্যগুলো নগরীতে প্রবেশ করানো হয়।
নাম প্রকাশ না করার সর্তে একটি বিশ্বস্ত সূত্র জানায়, দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র কেএম শহীদুল্লাহ ওরফে লেটকু শহীদ চোরাই শাড়ি-খ্রী পিচের ব্যবসা করে আসছে। গৌরনদীর ভোলা সাহার মাধ্যমে সরাসরি ভারত থেকে শাড়ি, কাপড়, থ্রী পিচ আমদানি করে আসছে সে। তবে প্রশাসনের নজরদারি বেড়ে যাওয়ায়, তার চোরাই ব্যবসা আড়াল করতে সম্প্রতি নগরীর পুলিশ লাইন রোডে বরিশাল ফ্যাশন হাউজ নামে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলে সে। লোক দেখানো এই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কেএম শহীদুল্লাহ যে চেয়ারটিতে বসে, তার ঠিক পিছনে একটি গোপন কক্ষ রয়েছে। যা খালি চোখে দেখার উপায় নেই। ওই কক্ষের দরজা খোলা হয় গোপন সুইজের মাধ্যমে। চোরাই পন্যের একটি বড় অংশ মজুদ থাকে ওই কক্ষে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযান চালালে এর প্রমান মিলবে বলে জানিয়েছে বিশ্বস্ত সূত্রটি।
সূত্রটি আরো জানায়, কয়েক দিন পূর্বে নৌ পথে ভারত থেকে চোরাই পথে ২৪১ বস্তায় ২ কোটি টাকা শাড়ি-থ্রী পিচ প্রবেশ করে বাংলাদেশে। এর আগে একাধিকবার ভোলা সাহার সাথে দেখা করেন প্যানেল মেয়র শহীদুল্লাহ। যার প্রমান করেছে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে বিভিন্ন স্থানে থাকা একাধিক সিসি ক্যামেরার ফুটেজে। প্যানেল মেয়র শহীদুল্লাহ তার ব্যক্তিগত ব্যবহৃত কালো গাড়িতে করে অগ্রিম টাকা পৌছে দেয় ভোলা সাহার কাছে। শহীদুল্লাহ’র গ্রীন সিগনাল পেয়ে গত পরশু রাতে চোরাই শাড়ি-থ্রী পিচ বোঝাই ট্রলাটি বরিশাল নগরীর উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়। নগরীর চাঁদমারি খেয়াঘাটে ট্রলারটি আনলোড হওয়ার কথা। কিন্তু এরই মধ্যে বাবুগঞ্জ থানার পুলিশ বিষয়টি টের পেয়ে আড়িয়াল খাঁ নদীতে অভিযান চালিয়ে চোরাই শাড়ি বোঝাই ট্রলারটি আটক করে। খবর পেয়ে ট্রলারটি ছাড়ানোর জন্য বিভিন্ন প্রভাবশালী ব্যক্তি ও কয়েকজন প্রভাবশালী সাংবাদিকের মাধ্যমে তদবির চালায় কেএম শহীদুল্লাহ। কিন্তু বাবুগঞ্জ থানা পুলিশ নিষ্ঠা ও সততার সাথে দায়িত্ব পালন করায় শেষ পর্যন্ত ২ কোটি টাকার শাড়ি-থ্রী পিচ ছাড়িয়ে নিতে ব্যর্থ হয় প্যানেল মেয়র।
এব্যাপারে বরিশাল ফ্যাশন হাউজের মালিক প্যানেল মেয়র কেএম শহীদুল্লাহ’র সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, তার প্রতিপক্ষ চকবাজার এলাকার ব্যবসায়ীদের একটি সিন্ডিকেট তাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে। তার দাবি, চকবাজার এলাকার ব্যবসায়ীরা ভারত থেকে চোরাই পথে শাড়ি আমদানি করে, তিনি নয়।