প্রতিচ্ছবি বিভিন্নভাবে দেখা যায়। আয়নায় দেখা যায়, পুকুরের পানিতেও দেখা যায়। পাবলিক ফিগারদের প্রতিচ্ছবি মানুষের প্রশংসা ও সমালোচনায়ও দেখা যায়। এখানে শুধু গত সাড়ে তিন বছরের ফেসবুক পোস্ট থেকে দেখা হয়েছে।
জানি না প্রতিমন্ত্রী মহোদয় ডায়েরি লিখেন কিনা। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকলে শেষ জীবনে আত্মজীবনী লেখার সম্ভাবনা একটু বেশি থাকে। লেখাই উচিৎ। এতে জাতীয়, আন্তর্জাতিক নানা বিষয়ে পাঠকদের জ্ঞানভাণ্ডার বাড়ে সন্দেহ নেই। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম ফেসবুককে ডায়েরির মতো ব্যবহার করছেন যা প্রশংসনীয়। এতে জনগণেরে সাথে তাঁর সম্পর্কটি যেমন নিবিড় হচ্ছে তেমনি তাঁর সোশাল ডায়েরির পাতাও ভরে উঠছে।
মন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রীদের সোশাল মিডিয়া ব্যবহার কেমন হতে পারে তার একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জনাব মো. শাহরিয়ার আলম।
তাঁর পোস্টের মাধ্যমে আমরা জানতে পারি কবে, কোন দেশে, কোন রাষ্ট্র প্রধান বা মন্ত্রীর সাথে কি বিষয়ে তাঁর বৈঠক হচ্ছে। সামাজিক বিভিন্ন ইস্যুতে তাঁর অবস্থানও পরিষ্কার করেন তিনি ফেসবুকে। ধর্ষণকারীদের ধরার জন্য বনানী থানায় বিস্তারিত জানাতে ও সোশাল মিডিয়ায় ছবি প্রকাশ করতে বলেন যেন অন্যরা খোঁজ দিতে পারে। সাধারণ মানুষের কথাও থাকে (কসাই, ফায়ার সার্ভিস কর্মী প্রভৃতি)। গুরুত্বপূর্ণ মোবাইল অ্যাপের কথাও থাকে। শুধু বঙ্গবন্ধু বা জাতীয় নেতা নন অনেক আঞ্চলিক নেতার জন্ম ও মৃত্যু দিবসেও তাঁকে পোস্ট দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে দেখা যায়। এমনকি তাঁর বিরুদ্ধে নির্বাচন করা প্রার্থীর মৃত্যুতেও দেখতে যেতে চেয়েও যাওয়া হয়নি বলে দুঃখ প্রকাশ করে পোস্ট দিয়েছেন যা এদেশের রাজনীতিতে একটি বিরল চর্চা।
তাঁর একান্ত অনুভূতির কথাও জানতে পারছে মানুষ। ছাত্রজীবনে হাতিরপুলের মেসে থাকতে কোথায় চৌকি কিনেছেন কিংবা মন্ত্রী হবার পরে সবচেয়ে বেশী মিস করেন হাটে বাজারে ঘোরা। নিজেকেই প্রশ্ন করেন- ‘তাঁদের কথা কতটুকু শুনতে পাই আমরা?’ তাঁর একান্ত উপলব্ধি- ‘সবাই ভালো থাকুক, এর চেয়ে বেশি কোন চাওয়া পাওয়া নেই বেশিরভাগ মানুষেরই’। অনেক ক্ষুধা নিয়ে খেতে বসেছেন। এমন সময় এক অনাহারী মাকে দেখে লিখেছেন- ‘ছলছলে চোখে খাওয়া শেষ করেছি কিন্তু চোখের পানি ভাতে পড়তে দেইনি’। জানা যায় সুরেণ স্যারের প্রতিদিনকার ১ মিনিটের ‘রিচ্যুয়াল’ তাঁর জীবনে অনেক কাজে দিয়েছে বিশেষ করে ‘অল্প কথায় প্রশ্ন বোঝা আর উত্তর তাড়াতাড়ি, সংক্ষিপ্ত আকারে দেয়া (সবসময় না পারলেও!)’। এরকম অনেক একান্ত অনুভূতি সোশাল মিডিয়ায় প্রকাশ করে তিনি ক্রমাগত বুঝিয়ে চলেছেন আমরা যে ভাবি ‘মন্ত্রীদের বোধহয় মাটিতে পা পড়ে না’ ধারণাটি ভুল।
তাঁর ফেসবুক আইডির ফলোয়ার ১.৬৩.৮৯০। আর তাঁর ফেসবুক পেজে লাইক দিয়েছেন ৯,১৬,৭৭৩ জন। ফেসবুকের ফ্রেন্ড লিস্টের ৫০০০ ফ্রেন্ড তো আছেই। সব মিলিয়ে ১ মিলিয়নের বেশি মানুষ। ১০ লক্ষ মানুষের জনসভায় একটি বক্তব্য দেয়া আর ফেসবুকে সেই কথাটি লিখে পোস্ট দেয়ার মধ্যে খুব তফাৎ কি আছে? এই দিকটি সম্ভবত আমাদের জনপ্রতিনিধিরা অনেকেই এখনও খেয়াল করেননি। খেয়াল করলে এমন সহজ সুযোগ হাতছাড়া করার কোনো কারণ দেখি না।
কিছুদিন আগে সোশাল মিডিয়ার মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মকে তথা জনগণকে কাছে টানতে বলেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। এই কাজটি সবচেয়ে সার্থকভাবে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মহোদয় করছেন বা করতে পারছেন বললে একটুও বাড়িয়ে বলা হবে না। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর পোস্টগুলোতে মন্ত্রণালয়ের বা দলীয় কার্যক্রমের বাইরে ব্যক্তি মানুষটির ঘ্রাণ পাওয়া যায়। বোঝা যায় মন্ত্রীও মানুষ।
খাদ্য রসিক
খাদ্য রসিক তিনি পরিমাণের দিক দিয়ে নন উপভোগ আর বৈচিত্র্যের দিক দিয়ে। সেটা হতে পারে রাজশাহীর ‘সিগনেচার ফুড’ কালাইয়ের রুটি, চানাচুর, ভর দুপুরের চা বিরতি, বাটার মোড়ের জিলাপি কিংবা ছাত্র জীবনের মধুর ক্যান্টিনের পাউরুটি-মাখন-চিনি কিংবা নিউইয়র্কে বৃষ্টি নামলে খিচুড়ির কথা মনে পড়া।
সামাজিক সচেতনতামূলক পোস্ট
যথেষ্ট সংখ্যক সচেতনাতামূলক পোস্ট করেন তিনি যেমন ঢাকায় দ্রুত ছড়াচ্ছে চিকুনগুনিয়া, ডেঙ্গু, খালি পেটে লিচু খেলে শিশুর মৃত্যু হতে পারে, ফরমালিন বিষয়ে ভ্রান্তি দূর করতে সরকারি গণবিজ্ঞপ্তি।
“ভিটে মাটি ছেড়ে মানুষ অন্য কোথাও যেতে চায়না !” এটা বললে মানুষের নিরাপদ স্থানে না যাবার সিদ্ধান্তকে গ্লোরিফাই করা হবে। তাই বলি, “নিরাপদে থাকলেই জীবন থাকবে, জীবন থাকলে ভবিষ্যৎ থাকবে। আর ভবিষ্যৎ থাকলে ভাঙ্গা ঘর আবার নতুন করে গড়া যাবে এই প্রচারটা সারাবছর চালাতে হবে। জনগণ এটা করতে পারে কক্সবাজার, সেন্টমার্টিন, কুয়াকাটা বেড়াতে গিয়ে, গল্পের ছলে’’।
‘‘যে কোন রাস্তা বা ব্রীজ উদ্বোধন হবার পরপরই দুর্ঘটনার একটা ঝুঁকি থাকে। পথচারীরা এবং পাড়াপড়শী দেখতে আসেন আর চালকরা মনের সুখে গাড়ী চালান। একটু আগে মগবাজার ফ্লাইওভারে ওঠার সময় আমার মোবাইল দিয়ে ভিডিও করার চেষ্টা করছিলাম, শুরু করতে না করতেই দ্রুত ব্রেক করার কারণে মোবাইলটা হাত থেকে পড়ে গেলো আমার। ফোনটা সামলে নিয়ে দেখি একটা মেয়ে হঠাৎ করে রাস্তা পার হতে চাচ্ছিলো। সাবধানে থাকবেন সবাই’’।
আরও কয়েকটি উদাহরণ- ‘যারা মোটরসাইকেল চালাও বা চালান, দয়া করে নিয়ম মেনে সাবধানে চালাবেন’।
‘সবচেয়ে বেশি উল্টো পথে যানবাহন চলে, মানুষ যেদিক দিয়ে খুশি সেদিক দিয়ে রাস্তা পার হয় হাতিরঝিলে’।
‘ব্রাহ্মণবাড়ীয়ার সরাইলে খাঁটি মিয়ার সাথে দুঃখু মিয়ার বাস ভাড়া নিয়ে সংঘর্ষে ৫০ জন আহত। এটাই হোক বছরের শেষ মারামারি। শান্তিতে থাকতে শিখুক সবাই’।
‘চালকের বা হেলপারের সাজা সচরাচর চোখে পড়েনা। তারা ১০০ বছর হরতাল করুক, রায়ের বাস্তবায়ন হতেই হবে। সেইসাথে সকল দুর্ঘটনার সঠিক তদন্তের পর দ্রুত বিচারকার্য শেষ করে রায় বাস্তবায়ন করতে হবে। মানুষকে জিম্মি করে রাখার এই সংস্কৃতি থেকে তাদেরকে বের করে আনতে হবে’।
তাঁর পোস্টে পাহাড় ধ্বসে ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য করার আহ্বান (যাকাত থেকে হলেও) যেমন দেখা যায় তেমনি পালিত মেয়ে আয়েশার সম্ভ্রমহানীর পর বিচার চেয়ে বিপদে পড়ে মেয়েকে নিয়ে রেললাইনে আত্মাহুতি দেয়া হযরত আলীর প্রতি মমতা প্রকাশের পাশাপাশি প্রশ্ন ছুঁড়ে দিতেও দেখা যায় ‘মানুষ হতে আর কতোদিন অপেক্ষা করতে হবে আমাদের’।
সমস্যা সমাধান
সোশাল মিডিয়ার মাধ্যমে অবগত হয়ে সমস্যা সমাধানেও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মহোদয় উদ্যোগী। তাঁর ফেসবুক প্রতিক্রিয়ায় প্রবাসী নাজমুল উদ্ধার পেয়েছে। থাইল্যান্ড, মক্কা, সৌদি আরব, মালয়েশিয়া, লিবিয়া, ইংল্যান্ড যেখানেই দূর্ঘটনা ঘটুক তিনি সাথে সাথে দূতাবাসের নম্বর ও ইমেইল দিয়ে জানাতে আহবান করেন। মুসা ইব্রাহিম পাহাড়ে উঠতে গিয়ে বিপদে পড়লে রেসকিউ হেলিকপ্টার পাঠানোর কথাও জানা যায় সোশাল মিডিয়ায়। রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন পদ্মা নদীর পাড়ে কাঁটা তারের বেড়া দিতে উদ্যত হলে প্রতিবাদ করেছেন তিনি। পিন্টুকে বাঁচাতে না পারা আর ব্যস্ততার কারণে মিলনকে সাহায্য করতে না পারার ব্যর্থতাও অকপটে লিখতে পারেন ফেসবুকে। প্রবাসী বাঙ্গালীদের কোনো অনুষ্ঠানে গেলেই বলেন Magistrates All Airports of Bangladesh (www.facebook.com/AirportMagistrates) পেজটির কথা। ইনবক্স চেক করা সম্ভব হয় না বিধায় ইমেইল করার কথা ফেসবুকেই লিখেছেন তিনি। আশা করি যারা তাঁকে লিখতে চান ফেসবুক মেসেঞ্জারে না লিখে ইমেইল করবেন।
স্পোর্টস প্রেমিক প্রতিমন্ত্রী
লিখেছেন তাঁর নির্বাচনী এলাকা সরদহতে সবার অংশগ্রহণে তুমুল জনপ্রিয় হয়েছে ‘নাইট ক্রিকেট’। দারুণ এক উপলব্ধি উঠে এসেছে অন্য একটি পোস্টে – ‘একটা বিষয় খেয়াল করলাম আজকে, ছোটদের খেলায় পক্ষ নেয়া যায় না। সেমিফাইনালে হেরে টাংগাইলের ধনবাড়ীর ছোট ছোট মেয়েরা যখন গোল হয়ে একজন আরেকজনকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছিলো তখন তাদেরকে সান্ত্বনা দিতে গিয়ে দেখি আমারও মোটামুটি একই হাল’। রাজশাহী কিংস নিয়ে অনেক পোস্ট আছে। ক্রিকেট বিষয়ক পোস্ট বেশি কিন্তু ফুটবল, টেনিস, বাই সাইক্লিং, হকি, গলফও আছে।
দিবস স্মরণ
মে দিবস, বিজিবি দিবস, জাতিসংঘ দিবস জেল হত্যা দিবস প্রভৃতি গুরুত্বপূর্ণ দিবসে তাঁর পোস্ট থাকবেই। এমনকি ফুটবলার মুন্নাও আছেন তাঁর পোস্টে – ‘আজ ফুটবলার মুন্নার ১২তম মৃত্যুবার্ষিকী। আল্লাহতায়ালা তাঁকে জান্নাত নসীব করুন’।
নির্বাচনী এলাকার একজন সম্পর্কে লিখেছেন ‘আমারও খুব প্রিয় একজন মানুষ ছিলেন, আমাকে খুব ভালোবাসতেন। আজ বেঁচে থাকলে খুব খুশি হতেন। আল্লাহতালা তাঁকে জান্নাতবাসী করুন’। লিখেছেন ‘ড. জোহার আত্মদান পৃথিবীর ইতিহাসে সম্ভবত একমাত্র ঘটনা যেখানে ছাত্রদের বাঁচাতে একজন শিক্ষক প্রাণ দিয়েছিলেন’।
প্রোফাইল ও কাভার ফটো পরিবর্তন
আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে বাংলাদেশ সেমিফাইনালে উঠলে দেখা যায় প্রতিমন্ত্রী মহোদয়কে প্রোফাইল ফটো হিসেবে বাংলাদেশ ক্রিকেট টিমের ছবি ব্যবহার করতে। বেশ কিছুদিন প্রোফাইল ফটো হিসাবে শহীদ কর্নেলের ছবি ব্যবহার করেছেন। শোকের মাস আগস্টে কালো ব্যাজ ও হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যুবার্ষিকীতে তাঁর ছবিও প্রোফাইল ফটোতে স্থান পেয়েছে। কাভার ফটোতে ঘুরে ফিরে বঙ্গবন্ধুই স্থায়ী। তবে ভাষা আন্দোলন, ২৫ মার্চ, শাহবাগের জনতার মঞ্চ, নৌকা মার্কায় ভোট দিন মাঝে মাঝে স্থান পেয়েছে।
পরিবার
মেয়ে মারিয়ামের ৭ বছর পূর্ণ করার দিনে দাদার কিনে দেয়া বাঁশি বাজানো চলছে। সন্তানের সফলতায় তৃপ্ত পিতাকেও খুঁজে পাওয়া যায় একাধিক পোস্টে। একই মঞ্চে বাবার সাথে পাশাপাশি বসার অনুভূতিও প্রকাশ করেছেন সোশাল মিডিয়ায়। আর এক পোস্টে দেখা যায় ছেলেদের মতো মেয়েও খেলা পাগল হয়েছে তাই রাজশাহী কিংসের হলুদ পতাকা আঁকার জন্য হলুদ রং খুঁজছে। মেয়েকে মাছের কাঁটা বেছে দেয়া কিংবা ছেলেকে রান করতে-উইকেট পেতে দেখা, ছেলে বাবার চেয়ে ৫ ইঞ্চি লম্বা হয়ে গেছে দেখার তৃপ্তি, মা-ছেলের কেক কাটা, হোটেল থেকে নাম্তা কিনে আনার জন্য মায়ের রাগ, বাবার অসুস্থতা, ছেলের গ্র্যাজুয়েশন এমন নানা পারিবারিক বিষয়ের চিত্র একজন মন্ত্রীকে মানুষের কাছে নিয়ে যায়।
বন্ধু বৎসল
অনেকদিন পর পুরনো বন্ধুদের সাথে দেখা হলে হাহা হিহি করেই সময় চলে যায় সাধারণ মানুষের মতো তাঁরও। স্থান পায় কলেজ জীবনে বন্ধু ছোটনকে আর জাপান প্রবাসী বন্ধু মাসুদের মাতৃ বিয়োগের কথাও। মেক্সিকোতে প্রদর্শনী দেখতে গিয়েও মনে পড়ে বন্ধুদের।
অসাধারণ কয়েকটি পোস্ট
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমুদ্রের জলে পা ভেজানো ছবি কতোজনই তো শেয়ার করেছে কিন্তু তিনি শেয়ার করার সময় এই ইনানীর চেনছড়ি গ্রামে ১৯৫৮ সালের সামরিক শাসনের সময় বঙ্গবন্ধু বেশ কিছুদিন ছিলেন তথ্যটি জুড়ে দিয়ে পোস্টটিকে অন্য মাত্রায় নিয়ে গেলেন।
আর একটি পোস্ট – ‘একসাথে এতো দেশের পতাকা আগে কখনো ওড়েনি’।
২৮ বছর ঢাকার এখানে ওখানে থেকে এই প্রথম ২৪/১০/২০১৫ খ্রিঃ তারিখ বিনা ভাড়ার সরকারী বাড়িতে (জনগণের পয়সায়) উঠার খবর ফেসবুকে লিখেছেন।
বঙ্গবন্ধুর ধানমন্ডির বাড়ির সিঁড়িতে যেখানে ঘাতকের গুলিতে নিহত হবার পর তাঁর লাশ পড়ে ছিল সে জায়গার ছবি দিয়ে লিখেছেন – ‘এখানে বাংলাদেশ মুখ থুবড়ে পড়ে ছিল বহু বছর’।
কুরবানীর ঈদের দিন কসাইদের প্রতি মমত্ববোধ থেকে লিখেছেন ‘ধন্যবাদ আপনাদের। আমাদের কুরবানি কবুল হলে তার নেকির ভাগিদার আপনারাও হবেন’।
সংগীত শিল্পী লাকী আখন্দের মৃত্যুতে লিখেছেন ‘সংগীতপ্রেমীরা কাঁদো কিন্তু ভুলে যেও না’।
এক পোস্টে তিনি লিখেছেন ‘আমাদের কালচারে বা সামাজিকতায় কিছু ভুল বিষয় আছে, যার মধ্যে অন্যতম হাসপাতালে রুগী দেখতে যাওয়া। আমাদের দেশে হয়তো এখনও কোন পরিসংখ্যান নেই কিন্তু হাসপাতালে দর্শনার্থীদের জন্য কত রুগীর অসুখ সারতে বিলম্ব হয়, কত রুগী মারা যান তা জানলে হয়তো আমরা এই ব্যাপার আরও সতর্ক হতাম’। তবে সবচেয়ে অসাধারণ পোস্ট বোধহয় এটি যেখানে তিনি লিখেছেন ‘২৯ ডিসেম্বর। ৮ বছর আগে এই দিনে চারঘাট-বাঘার ভোটাররা আমার প্রতি সমর্থন জানিয়েছিলেন…. …….সারাজীবন মনে থাকবে এবং সারাজীবন তার প্রতিদান দেবার চেষ্টা করবো’।
বিভিন্ন ছবি
বঙ্গবন্ধু ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুর্লভ কিছু ছবি শেয়ার করেছেন বিভিন্ন সময়। নিজের ও অন্যদেরও দারুণ কিছু ছবি আছে তাঁর ফেসবুক পোস্টে।
শেষ কথা
গত দুই বছরে পরাষ্ট্র পতিমন্ত্রী জনাব মোঃ শাহরিয়ার আলম গড়ে প্রতিমাসে ৫০+ পোস্ট দিয়েছেন সোশাল মিডিয়ায় (শুধু ফেসবুককে বিবেচনায় নেয়া হয়েছে। টুইটার বা ইন্সট্যাগ্রামকে বিবেচনায় নেয়া হয়নি)। সমস্যা সমাধান, জনসচেতনতা বৃদ্ধি, একান্ত অনুভূতির প্রকাশ, উন্নয়ন ভাবনা, খেলাধুলা, নেতা-কর্মীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন, সাধারণ মানুষের প্রতি মমত্ব, চিকিৎসা, বৃত্তি এবং সারাজীবন মানুষকে সেবা প্রদানের অঙ্গীকারসহ বিভিন্ন বিষয়ের অবতারণা নিঃসন্দেহে তাঁকে গণমানুষের নেতা হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। অন্যান্য মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রীরাও এভাবে এগিয়ে এসে সোশাল মিডিয়াকে একটি সার্থক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে দেখবেন আশা করি।
মন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রীদের সোশাল মিডিয়া ব্যবহার কেমন হতে পারে তার একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জনাব মো. শাহরিয়ার আলম। তাঁর পোস্টগুলোতে মন্ত্রণালয়ের বা দলীয় কার্যক্রমের বাইরে ব্যক্তি মানুষটির ঘ্রাণ পাওয়া যায়। বোঝা যায় মন্ত্রীও মানুষ।
লেখক : সহকারী পরিচালক, জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিস, বগুড়া।