এ এক অাজব কাহিনী। ভারতের মুম্বাইয়ের এক লোকের সঙ্গে বিয়ে হয় উত্তর গোয়ার ক্যান্ডলিম গ্রামের এক নারীর। সেটাও ২০ বছর আগের ঘটনা। স্বামীর সঙ্গে মুম্বাইয়ে যাওয়ার পর জানতে পারেন তার আরেকজন স্ত্রী রয়েছে। বিষয়টি মেনে নিতে পারেননি ওই নারী। ফিরে আসেন বাবার বাড়িতে। কিন্তু বাবার বাড়িতে ফিরে আর স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেননি তিনি। তার অস্বাভাবিক আচরণে বিরক্ত হয়ে পরিবারের লোকজন তাকে ঘরে অাটকে রাখেন। সেভাবেই কেটে গেছে ২০ বছর। টানা ২০ বছর ওই অন্ধকার ঘরেই আটকে ছিলেন তিনি। খবর এনডিটিভির।
গত ২০ বছরে তার পৃথিবী ছিল ওই অন্ধকার ঘরটাই। আর একটি জানালা দিয়ে বাড়ির লোকজন তাকে খাবার-দাবার দিত।
নারী অধিকার নিয়ে কাজ করে এমন একটি সংগঠন ওই নারীকে উদ্ধারের সময় তিনি বিবস্ত্র অবস্থায় ছিলেন। দরজার তালা ভেঙে ফেলার পর তিনি দৌড়ে বাইরে বেরিয়ে আসেন।
গোয়া পুলিশের জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়াকে বলেন, নারী পুলিশ সদস্যের একটি দল তাকে উদ্ধারের সময় তিনি উলঙ্গ অবস্থায় ছিলেন। বর্তমানে মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন অবস্থায় আছেন তিনি। চিকিৎসার জন্য তাকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ওই বাড়িতে তার বাবা-মা, ভাই, ভাইদের স্ত্রী, সন্তানরা থাকেন। জানালা দিয়ে তারা খাবার এবং পানি দিত। ওই নারীকে আটকে রাখা ঘরটা একবারে দুর্গন্ধ অবস্থায় দেখার কথাও জানান তিনি।
তাদের গ্রাম ক্যান্ডলিমের আশেপাশে দেশি বিদেশি হাজার হাজার ভ্রমণপিপাসু লোকজন বেড়াতে আসেন। কিন্তু ২০ বছর ধরে অন্ধকার ঘরে আটকে ছিলেন তিনি। পৃথিবীর আলো-বাতাস কিছুই দেখেননি এসময়।
নারীদের নিয়ে কাজ করা সমাজসেবামূলক সংগঠন ‘বেইলাঞ্চ সাদ’ পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করেছিল। পরে পুলিশের একটি দল ওই বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ঘরের তালা ভেঙে তাকে উদ্ধার করে।
ওই নারীর পরিবার পুলিশের কাছে জানিয়েছেন ওই নারীর মুম্বাইয়ে বিয়ে হয়েছিল। স্বামীর অরেকজন স্ত্রী আছে জেনে মানসিকভাবে ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন তিনি। তারপর থেকে অন্ধকার ধরে থাকেন তিনি।
এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। পরিবারের দেয়া তথ্য রেকর্ড করে রাখার কথাও জানিয়েছে পুলিশ।